টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে সাইকেল পেল ২৭ কিশোর

  © সংগৃহীত

নামাজের প্রতি শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করতে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন মসজিদের ইমাম। সেই ঘোষণায় আকৃষ্ট হয়ে টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে পুরস্কার জিতে নিয়েছে নরসিংদীর ২৭ কিশোর। তরুণ আলেম মুফতি ইমদাদুল্লাহ কাসেমির উদ্যোগে শেখেরচরের বাবুরহাট বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদে শুক্রবার এমনই আয়োজন হল।

জানা যায়, কয়েকদিন আগে মুফতি ইমদাদুল্লাহ কাসেমি মসজিদে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ১৫ বছরের কম বয়সের কিশোররা যদি একটানা ৪০ দিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করে, তাহলে তাদেরকে একটি করে বাইসাইকেল পুরষ্কার দেয়া হবে।

সে ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে এলাকার অনেক কিশোরই নামাজ আদায় শুরু করে। টানা ৪০ দিন নিয়মিত জামাতে নামাজ পড়েছেন, এমন ২৭ জনের হাতে শুক্রবার সেই পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়।

শিশু-কিশোরদেরকে নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে মসজিদমুখি করার লক্ষ্যে আয়োজিত এমন উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মুফতি ইমদাদুল্লাহর এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ইমামের এমন কার্যক্রমে শিশু-কিশোরদের নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে। এরপর থেকে শিশুরা নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়তে আসছে।

মুফতি ইমদাদুল্লাহ কাসেমি বলেন, ঘোষণার পর থেকে প্রায় দুই শতাধিক কিশোর মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা শুরু করে। তারা ঠিকমতো নামাজ আদায় করছে কিনা তা হিসার রাখার জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর হাজিরা নেয়া হতো। যদি কেউ কোনো ওয়াক্তে অনুপস্থিত থাকতো তখন তার গণনা বন্ধ করে দেয়া হতো। তবে সে চাইলে তার নাম আবার লিখিয়ে নতুন করে নামাজের দিন গণনা শুরু করতে পারত। এভাবে নিয়মিত যাচাই-বাছাই ও হাজিরার ভিত্তিতে সর্বশেষ ২৭ জন বিজয়ী হয়।

তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে তাদের শুধু নামাজই পড়ানো হয়নি। বরং সঠিকভাবে নামাজ শিক্ষা ও নামাজ সম্পর্কে জরুরি মাসয়ালাও শেখানো হয়, সেই সঙ্গে তালিম-তরবিয়ত এবং নামাজের প্রতি মানুষকে আহবানের পাশাপাশি দ্বীনি ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া হয়েছে।

ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ গ্রহণে কীভাবে উদ্ধুদ্ধ হলেন, জানতে চাইলে মুফতি ইমদাদুল্লাহ কাসেমি জানান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান কিশোরদের মসজিদমুখি করতে এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। সে থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন তিনি।

সাইকেলে উচ্ছ্বসিত তরুণরা

তিনি বলেন, একদিন পত্রিকায় দেখি, ভারতেও এমন একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আমি সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হই এবং একদিন জুমাপূর্ব বয়ানে বিষয়টি উত্থাপন করি। আলহামদুলিল্লাহ উপস্থিত মুসল্লিরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

পরে পনেরো বছরের কম বয়সী কিশোরদের মধ্যে একটানা ৪০ দিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের মসজিদের তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায় করার প্রতিযোগিতা ঘোষণা করি। ঘোষণার পর থেকে প্রায় দুই শতাধিক কিশোর মসজিদে নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় শুরু করে।


সর্বশেষ সংবাদ