পুলিশ হলেন তিন এতিম, পরিবারে আনন্দের বন্যা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০১৯, ১১:৪৬ AM , আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯, ১১:৪৬ AM
নেত্রকোনা জেলা শহরের কুমড়ি সরকারি শিশু পরিবারের তিন এতিম শিক্ষার্থী এবার পুলিশে চাকরি পেয়েছে। বিনা খরচে এতিম এ শিশুদের চাকরির ব্যবস্থা হওয়ায় আনন্দের বন্যা বইছে কুমড়ি সরকারি শিশু পরিবারে। নেত্রকোনা জেলা সদরের অদূরে কুমড়ি সরকারি শিশু পরিবারে শতাধিক এতিম ও অসহায় শিক্ষার্থী রয়েছে।
চাকরি পাওয়া শিশু পরিবারের তিন সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের ছবিলা গ্রামে মৃত নূরুল ইসলাম এর ছেলে এতিম আব্দুল মান্নান। অন্য সদস্যরা হলেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার পূর্ব মেদনি গ্রামের মৃত সাদেক মিয়ার ছেলে মোঃ সাদেকুল, এবং আটপাড়া উপজেলার বাউশা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে মোঃ লিংকন মিয়া।
তাদের মধ্যে মো. সাদেকুর রহমান ও আব্দুল মান্নান নেত্রকোনা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী এবং মো. লিংকন মিয়া এবার এসএসসি পাস করে নেত্রকোনা সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে। মাত্র ছয় বছর বয়সে এতিম সাদেক কুমড়ি সরকারি শিশু পরিবারে আসে। একই বয়সে বাবাকে হারিয়ে আব্দুল মান্নানও আসে এখানে। আর লিংকনের বাবা-মা কেউ নেই।
সরকারি শিশু (বালক) পরিবারের উপ তত্বাবধায়ক তারেক হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ১৯৭৩ সালে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানে প্রথমবারের মতো ৩ জন এতিম সন্তান সরকারি পুলিশের চাকরি পেল কোন প্রকার ঘুষ ও তদবির ছাড়া। শিশু পরিবারের ৩ সদস্য পুলিশের চাকরি পাওয়ায় তাদের ভাগ্য পাল্টে গেছে। এই তিনটি পরিবার আবার নতুন পথের স্বপ্ন দেখতে পারবে। তিনি শিশু পরিবারের এই তিন সদস্যকে নিয়ে গর্ববোধ করছেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি, নেত্রকোণা জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরীসহ নিয়োগ বোর্ডের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও জানান।
শিশু পরিবারের সদস্য কেন্দুয়ার ছবিলা গ্রামের এতিম আব্দুল মান্নান তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বিনে পয়সায় পুলিশের এই চাকরি আমার ভাগ্য বদলে দেবে। এজন্য আমি জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী সহ নিয়োগ বোর্ডের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, শিশু পরিবারের তিন সদস্য মান্নান, সাদেকুল ও লিংকন তাদের মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন। এজন্য তিনি খুব গর্বিত ও আনন্দিত।
নতুন পুলিশ সদস্যরা নিজের দায়িত্ব যথাযথ পালন করে ভবিষ্যৎ দিনগুলোতে পরিচ্ছন্ন সমাজ গঠন ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।