কেশবপুরের হরিহর ও বুড়িভদ্রা কচুরিপানায় ভরাট, বন্যার আশঙ্কা
যশোরের কেশবপুর উপজেলার হরিহর নদ ও বুড়িভদ্রা নদী কচুরিপানায় ভরে গেছে। গত দুই বছরেও এ কচুরিপানা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। যার ফলে, আসন্ন বর্ষায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, কচুরিপানা পরিষ্কার ও নদ-নদীর স্বাভাবিক পানির প্রবাহ সৃষ্টির দাবিতে গত বছর নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ৬ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
এছাড়া, উপজেলার নদীর উৎস মুখ থেকে সংস্কারের মাধ্যমে হরিহর নদ ও বুড়িভদ্রা নদীতে প্রবাহ সৃষ্টি, দীর্ঘদিন জমাকৃত কচুরিপানা অপসারণ, অবৈধভাবে নদীর জায়গা দখলকারী ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, হরিহর নদ ও বুড়িভদ্রা নদীর পলি অপসারণ, ২৭ বিলের পানি অপসারণ এবং অবৈধভাবে বিলের ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনকারী ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছেন এলাকাটির সচেতন নাগরিকরা।
জানা যায়, কেশবপুর পৌর শহরের উপর দিয়ে হরিহর নদ ও বুড়িভদ্রা নদী প্রবাহিত। নদী দুটি দিয়ে কেশবপুর ও মণিরামপুর উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম ও বিলের পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত দুই বছরে নদীতে কচুরিপানায় ভরাট হয়ে নদীর নাব্যতা হারিয়েছে এবং স্বাভাবিক পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোডের্র গাফিলতির কারণে নদী দুটি পুনঃখনন না করায় এবং কচুরিপানায় ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে জলাবদ্ধতায় পৌর এলাকার অধিকাংশ বিল গ্রাম প্লাবিত হয়ে গিয়েছিলো। যার কারণে গত বছরে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট ৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ স্মারকলিপির দাবি অনুযায়ী কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় আগামী বর্ষায় কেশবপুর পৌর সভা ও মণিরামপুর উপজেলার অর্ধশত গ্রাম ও বিলসমূহ প্লাবিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। ওপর দিকে বুড়িভদ্রা নদীর কেশবপুর টু মঙ্গলকোট ৩৫ কিলোমিটার নদী পুনঃখনন না করলে নদীর অববাহিকায় গ্রামগুলো বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: আজ বিশ্ব বাবা দিবস
এদিকে কেশবপুর পৌর সভার হরিহর নদীর উপরে শ্রীগঞ্জ ব্রিজের নিকট থেকে ৬০০ মিটারের খোঁজাখালটি খনন না করার করেন কেশবপুর পৌর সভার ও মণিরামপুর উপজেলা প্রায় ২৬ টি গ্রামের পানি বলধালি বিল হয়ে খোঁজাখাল দিয়ে হরিহর নদে প্রবাহের বাঁধা কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন শিকদার বলেন, উপজেলার নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক প্রবাহের ব্যবস্থা করতে নদী খননের ২য় পর্যায় হরিহর নদীর ২৫ কিলোমিটার, ডিপিবি প্রথম সংশোধিত হরিহর নদীর ৩৫ কিলোমিটার, আপার ভদ্রা ১৮.৫ কিলোমিটার ও হরি তেলিগতি ২১ কিলোমিটার নদী খনন প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলার অভ্যন্তরে ১০টি ছোট বড়ো নদ-নদী ও খাল খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পৌরসভার খোঁজা খাল খনন ও ৩০ টি ব্রিজ কালভার্টের নির্মাণ প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে হরিহর নদের ও বুড়িভদ্রা নদীর কচুরিপানা পরিষ্কার বা অপসারণ পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে খুব শীঘ্রই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।