অন্যের ভুল ধরার আদব ও নিয়ম

৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৮ PM , আপডেট: ২৩ জুন ২০২৫, ০৪:৩৬ PM
অন্যের ভুল ধরার আদব ও নিয়ম

অন্যের ভুল ধরার আদব ও নিয়ম © সংগৃহীত

মানুষ মাত্রই ভুল করে—এটাই স্বাভাবিক। যেমন মানুষ ভুল করবে, তেমনই কেউ না কেউ সে ভুল সংশোধনের পথও দেখাবে। তবে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় সীমা অতিক্রম করা হয়, যা জুলুম ও অন্যায়ের পর্যায়ে পড়ে যায়। অথচ ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে, কীভাবে ভদ্র ও সুন্নাহসম্মতভাবে অন্যের ভুল সংশোধন করতে হয়। দুঃখজনকভাবে অনেকেই ভুল ধরিয়ে দেওয়ার সময় ভর্ৎসনা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য এমনকি কটূক্তি পর্যন্ত করে বসেন। অথচ এই ভুলগুলো অনেক সময় হয় নিতান্তই সাধারণ ও দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া ছোটখাটো ভুল।

ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আচরণ ছিল অত্যন্ত নম্র, হিকমাহপূর্ণ ও হৃদয়গ্রাহী। একবার তিনি ছোটবয়সী সাহাবি হজরত আনাস (রা.)-কে একটি কাজ করতে বলেছিলেন। উত্তরে আনাস (রা.) বলেন, ‘না, আমি পারব না।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) কিছু বলেননি, বরং মুচকি হেসে সেখান থেকে চলে যান। পরবর্তী সময়ে হজরত আনাস (রা.) বলেন, “ওই মুচকি হাসিটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। এরপর আমি জীবনে আর কখনো সে ধরনের ভুল করিনি।” তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ ১০ বছর আমি রাসুল (সা.)-এর খেদমতে ছিলাম, কিন্তু তিনি কখনো আমাকে ধমক দেননি কিংবা কোনো কটু বাক্য বলেননি। এমনকি কখনো বলেননি, ‘তুমি এটা কেন করলে?’”

আরেকবার এক যুবক সাহাবি (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.), আমাকে জিনা করার অনুমতি দিন।’ কথাটি শুনে উপস্থিত সাহাবিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। কিন্তু রাসুল (সা.) ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে যুবকটিকে কাছে ডাকলেন এবং বললেন, ‘তুমি কি চাও, এমন কাজ কেউ তোমার মায়ের সঙ্গে করুক?’ যুবক বলল, ‘না।’ রাসুল (সা.) আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কন্যা, বোন কিংবা খালার সঙ্গে এমনটা হলে তুমি কি সহ্য করতে পারবে?’ প্রতিবারই যুবক বললেন, ‘না’। তখন রাসুল (সা.) তার উপর দোয়া করলেন—‘হে আল্লাহ, তুমি এই যুবকের পাপ ক্ষমা করো, তার হৃদয়কে পবিত্র করো এবং তাকে এমন প্রবৃত্তি থেকে রক্ষা করো।’ এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, নবীজী (সা.) কিভাবে একজন ভুলকারীকে ভদ্রতা, সদাচরণ এবং প্রজ্ঞার মাধ্যমে সংশোধনের পথ দেখিয়েছেন।

আমাদের সমাজে আজ দেখা যায়, পরিবার থেকে কর্মক্ষেত্র—সবখানেই কেউ সামান্য ভুল করলেই তার প্রতি অসহিষ্ণুতা দেখানো হয়, কঠোর ভাষায় কথা বলা হয়, এমনকি শারীরিক আঘাতও করা হয়। এমন আচরণ মোটেও ইসলামী শিষ্টাচারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বরং রাসুল (সা.)-এর নম্র, সংবেদনশীল ও হিকমাতপূর্ণ পদ্ধতিই হওয়া উচিত আমাদের আদর্শ। এর মাধ্যমেই সমাজে সত্যিকারের সংশোধন ও সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রাসুল (সা.)-এর আদর্শকে অনুসরণ করে ভুল সংশোধনের উত্তম পন্থা গ্রহণ করার তাওফিক দিন। আমিন।

ট্যাগ: ইসলাম
জকসুতে ভোট দিতে লাইনে শিক্ষার্থীরা, জরুরি সিন্ডিকেট সভায় প্…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নির্বাচনে কোনো আসনেই কখনো পরাজিত হননি খালেদা জিয়া
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
শেকৃবিতে সিন্ডিকেট সভা ঘিরে উত্তেজনা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
‘আপসহীন’ খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য জীবন
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
শেষ মুহূর্তে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন যারা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫