গ্রেপ্তারকৃত নজরুল ইসলাম © সংগৃহীত
রাজধানীর কলাবাগানে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রী তাসলিমা (৪২) কে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্বামী নজরুল ইসলামকে (৫৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বংশাল থানাধীন নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীর পরকীয়া আছে এমন সন্দেহ ও সম্পত্তির জন্য স্ত্রী তাকে হত্যা করতে পারেন এমন সন্দেহ পোষণ করে আসছিলেন নজরুল ইসলাম। রবিবার (১১ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে নজরুল ইসলাম কলাবাগানের ১ম লেনের একটি ফ্ল্যাটে ফিরে দেখেন দরজার তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ ও সম্পত্তি হারানোর আশঙ্কায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাত ১২টার দিকে ঘুমন্ত স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে ধারালো দা দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি।
এরপর লাশটি গামছা, চাদর ও ওড়না দিয়ে মুড়ে ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। পরবর্তীতে রক্তের দাগ মুছে ফেলেন, জামাকাপড় ধুয়ে ফেলেন এবং আলামত গোপনের চেষ্টা করেন।
তিনি আরও জানান, সোমবার (১২ অক্টোবর) সকালে নজরুল বড় মেয়ে নাজনীন আক্তারকে জানান তাদের মা অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। মেয়ে ঘরে রক্তের দাগ দেখতে পেয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে নজরুল দুই মেয়েকে নিয়ে আদাবরের ফুফুর বাসায় রেখে নিজের প্রাইভেটকারে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সন্দেহ হলে ভিকটিমের ছোট ভাই নাঈম হোসেন ও ভিকটিমের দুই মেয়ে গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কলাবাগান থানায় এসে অভিযোগ দেয়।
ডিসি মাসুদ আরও জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল ভিকটিমের ফ্ল্যাটে উপস্থিত হয়ে দরজার তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে ঘরে থাকা ডিপ ফ্রিজ খুলে মাছ-মাংস সরাতেই চাদরে মোড়ানো অবস্থায় তাসলিমা আক্তারের মরদেহ দেখতে পায় পুলিশ। পরবর্তীতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওইদিন রাতেই ভিকটিমের ছোট ভাই নাঈম হোসেন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় তার বাসার ওয়্যারড্রোব হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়।