মেসেঞ্জার গ্রুপে আপত্তিকর ভিডিও, প্রতিবাদ করায় হেনস্থা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে আপত্তিকর ভিডিও পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীরা প্রতিবাদ করলে শ্রেণিকক্ষে ওই শিক্ষার্থী কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ইংরেজি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের অন্য শিক্ষার্থীরা। এতে মোট ২৯ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর করেছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ফারুক ইমতিয়াজ অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের ও আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। এছাড়া ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, ‘গত ১ সেপ্টেম্বর ইংরেজি বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা এক স্বল্পবসনা নারীর ভিডিও পাঠান অর্ণব। পরে ভিডিওটি 'আনসেন্ড' করার জন্য ব্যাচের ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ (সিআর) একাধিকবার ফোন করলেও অর্ণবকে ফোনে পাওয়া যায়নি।’
অভিযোগপত্র আরও উল্লেখ করা হয়, ‘গত ৬ সেপ্টেম্বর অর্ণব বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হলে তাকে গ্রুপ থেকে ভিডিও সরিয়ে ক্ষমা চাইতে অনুরোধ জানায় সহপাঠীরা। অর্ণব সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে উল্টো নিজের আপত্তিকর ভিডিও নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে ও যৌন ইঙ্গিতমূলক কথা বলেন। যেহেতু ব্যাচে ও গ্রুপে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও রয়েছে, তাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিব্রতকর বোধ করেছেন তারা।’
এতে আরও বলা হয়, ‘অর্ণবের কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশের ৫ (থ) এবং তার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যটি ৫ (ঙ) ধারা পরিপন্থী। তাই গ্রুপে আপত্তিকর ভিডিও পাঠানো ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধানানুযায়ী অর্ণবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
অভিযোগের বিষয়ে ফারুক ইমতিয়াজ অর্ণব জানান, ‘আমার বক্তব্য নিতে চাইলে আপনাকে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারা আমার ঘটনার ব্যাখ্যা দিবে।’
আরও পড়ুন : নবীন শিক্ষার্থীকে হলে তোলা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক তাসবিবুল গনি নিলয় জানান, ‘ঘটনাটি তাদের (অর্ণব) ব্যাচের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানে হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার আমাদের নেই। এ ঘটনার দায় সংগঠন নিবে না।’
এ ব্যাপারে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক সাবেরা সুলতানা জানান, ‘আমি বাইরে আছি, এখন কথা বলতে পারছি না। পরে ফোন করুন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান জানান, ‘যেহেতু ঘটনাটি একটি ব্যাচের একেবারেই অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাই তাদের নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করার পরামর্শ দিয়েছি। তবে বিষয়টি ইংরেজি বিভাগকে অবহিত করবো। তারা ব্যবস্থা না নিলে, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবো।’