কোমরের নিচে ব্যথায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে আসা প্রায় ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী পিঠের নিচে ব্যথায় ভুগছেন। ছাত্রদের মধ্যে এ হার ৩৮ শতাংশ থাকলেও ছাত্রীদের মধ্যে এর প্রবণতা ৭৬ শতাংশ। পশ্চােদশ বা কোমরের নিচে ব্যথায় ভুগছেন ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর কাঁধের ব্যথা রয়েছে ৩০ শতাংশ, ঘাড়ে ৩৭ শতাংশ ও হাঁটুতে ২৪ শতাংশের।
সম্প্রতি ‘অ্যাসেসমেন্ট অব মাস্কুলোস্কেলিটাল প্রবলেমস অ্যামং বাংলাদেশী ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইন রিলেশন টু ক্লাসরুম অ্যান্ড লাইব্রেরি ফার্নিচার’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। যা আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল স্প্রিঙ্গারে প্রকাশিত হয়েছে। দ্য ইনস্টিটিউশনস অব ইঞ্জিনিয়ার্সের (ইন্ডিয়া) সহায়তায় গবেষণাটি চালানো হয়েছিল।
শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিলিয়ে শ্রেণীকক্ষ ও গ্রন্থাগারের টেবিল-বেঞ্চ তৈরি না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হাড় ও মাংসপেশির জটিলতা বা মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারে ভুগছেন বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কম্পিউটারে দীর্ঘ সময় কাজ করলে যা করণীয়
এ বিষয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৪০০ শিক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ চালায় একদল গবেষক। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি গবেষকরা তাদের শ্রেণীকক্ষ ও গ্রন্থাগারের আসবাবেরও বিভিন্ন পরিমাপ নেন।
গবেষণার তথ্য বলছে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শ্রেণীকক্ষ ও গ্রন্থাগারের আসবাব শরীরের জন্য আরামদায়ক ও বিজ্ঞানসম্মত না। তাই ৫২ শতাংশ শিক্ষার্থীই হাড় ও মাংসপেশির ব্যথা বা মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারে ভুগছেন। ছেলেদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ জটিলতার হার বেশি। মেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি সময় অবস্থান এবং ত্রুটিপূর্ণ আসবাব ব্যবহারের কারণেই এ হারটা বেশি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন: ব্যথা সারাতে কার্যকর ও সাশ্রয়ী যন্ত্র উদ্ভাবন ঢাবির গবেষকদের
গবেষক দলের সদস্য কুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের সহকারী অধ্যাপক সোহেল পারভেজ বলেন, গবেষণায় কেবল স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যেহেতু তারা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসবাবপত্রগুলো ব্যবহার করছেন, তাই তাদের ওপর এর প্রভাবের বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হয়।
তিনি বলেন, গবেষণা ফলাফলে উঠে এসেছে ভুল নকশায় বানানো আসবাবপত্র ব্যবহারের কারণে একটি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী মাস্কুলোস্কেলিটাল সমস্যায় ভুগছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের সময়ের এক-তৃতীয়াংশই ব্যয় করে শ্রেণীকক্ষে ও গ্রন্থাগারে। এতে বৈজ্ঞানিকভাবে শরীরের জন্য অনুপযোগী আসবাবে দীর্ঘক্ষণ অনুপযোগী ভঙ্গিতে বসায় এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।