ছাত্রী হেনস্তার বিচার দাবিতে উত্তাল চবি, শিক্ষককেরা ফল খেতে ব্যস্ত!

 শিক্ষক সমিতির বর্ষা বরণ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও ফলাহার উৎসব
শিক্ষক সমিতির বর্ষা বরণ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও ফলাহার উৎসব  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রীকে হেনস্তার ঘটনার বিচার দাবিতে যখন বিক্ষোভে-মানববন্ধনে উত্তাল ক্যাম্পাস, তখন শিক্ষকেরা ব্যস্ত ছিলেন ফল উৎসবে! বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে ক্যাম্পাসজুড়ে। অবশ্য সংগীত বিভাগের শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানটি বর্জন করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে চবি শিক্ষক সমিতির বর্ষা বরণ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও ফলাহার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। উৎসবে ২২ রকমের মৌসুমী ফল পরিবেশন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে নিপীড়নের মতো জঘন্য ঘটনায় সবাই যখন প্রতিবাদে ব্যস্ত তখন জাতির বিবেক শিক্ষকেরা ব্যস্ত ফল উৎসবে। এটা অবিবেচনা প্রসূত কাজ। শিক্ষক সমিতির নেতাদের উচিৎ ছিল শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়া। কিন্তু ঘটনার চারদিন পরও শিক্ষক সমিতি ন্যক্কারজনক এই ঘটনার কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। কোনো বিবৃতিও দেয়নি। এর পরিবর্তে শিক্ষার্থীরা যখন মাঠে বিক্ষোভ করছে, তখন তাঁরা উদরপূর্তিতে ফলাহার করছেন। এটা নৈতিকভাবে নেওয়া যায় না।

এ বিষয়ে উৎসব বর্জন করা সংগীত বিভাগের শিক্ষক মিশকাতুল মমতাজ বলেন, ‘আমাদের বিভাগের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ন্যক্করজনক একটা ঘটনা ঘটেছে। এটা আমাদের গায়ে আঘাত লাগার মতো। আমাদের বিভাগটা অনুশীলন ভিত্তিক বিষয় হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা পরিবারের মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করি। আজকে যখন আমরা বিভাগে যাচ্ছিলাম, তখন আমাদের দিকে শিক্ষার্থীরা অসহায়ের মতো তাকিয়ে ছিল। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে শিক্ষক সমিতির অনুষ্ঠানে যোগ দিই? কীভাবে মঞ্চে গান গাইতে উঠি? তাই আমরা শিক্ষক সমিতির অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে বিরত ছিলাম।’

তবে ‘বর্ষা বরণ ও ফলাহার’ অনুষ্ঠানকে প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আজ সকাল পর্যন্ত আমাদের কোনো শিক্ষক বলেন নাই এই আমাদের অনুষ্ঠানটা করা উচিৎ হবে না। আমরা অনুষ্ঠানটাকে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে নেওয়ার জন্য কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আলাপ করেছি। সবাই বলেছেন, এটা ভালো হয়। আমরা এটা দিয়ে প্রতিবাদ করেছি। শিক্ষক সমাজ প্রতিবাদ করেছে। আমরা বিবৃতির দিকে যাব। আমাদের সভা থেকে বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা বিবৃতিও দিব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সকালে সংগীত বিভাগে গিয়েছি। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছি।’


সর্বশেষ সংবাদ