‘লাগলো ছোঁয়া বছর দুয়েক পর’
- মেহেদী মামুন
- প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১০:৩৮ PM , আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১০:৫২ PM
পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। করোনা মহামারীর কারণে গত দুইবছর জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন ছিলো না এ দিনটিতে। তবে এ বছর ফিরে এসেছে সে আমেজ আর সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও (জাবি) পিছিয়ে নেই বাঙালির এই বিশেষ দিনটিতে। নিজেদের সংস্কৃতিপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বৈশাখের এই বিশেষ দিনটি পালন করতে হাতে নিয়েছে নানা কর্মসূচি।
সাংস্কৃতিক রাজধানীতে এবারের বৈশাখের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানুষে মানুষে সম্প্রীতি বয়ে যাক, প্রকৃতি ও প্রত্যয়ে এসো বৈশাখ’। এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে থেকে চারুকলার শিক্ষার্থীরা মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করেন। শোভাযাত্রায় রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো: মনজুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অফিসার, কর্মচারি, মহিলা ক্লাবের সদস্যবৃন্দ ও জাবি স্কুল ও কলেজের ছাত্র-শিক্ষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে সকাল সোয়া আটটায় রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: নূরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় অধ্যাপক ড. মো: নূরুল আলম বলেন, বাংলা নববর্ষ উৎসব বাঙালি জাতিসত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ উৎসব বাঙালি সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এই ঐতিহ্য রক্ষা এবং পহেলা বৈশাখের উৎসবের মাত্রা বহুগুণে বৃদ্ধির জন্য বর্তমান সরকার ভাতা প্রদানের মাধ্যমে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে। এজন্য তিনি সরকারের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বৈশাখের গানে শুরু করেছি, শুভ নববর্ষ বলে শেষ করেছি: অধ্যক্ষ
দীর্ঘদিন পর নববর্ষ উৎযাপন করে জাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, আসলেই দুবছর আমরা নববর্ষ সেই অর্থে বরণ করতে পারি নাই। দুবছর পর বৈশাখের
আয়োজনে অংশ নিয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ এবং প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর আমরা নববর্ষ উৎযাপন করতে পারি। এখন নববর্ষ পালন করতে পেরে এ যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে। সবার জন্য কল্যাণময় হোক নববর্ষ।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী পঙ্কজ ফ্রান্সিস বলের, প্রথম সব কিছুই স্বাভাবিকভাবে নতুন অভিজ্ঞতার সঞ্চার করে। করোনার কারনে এটি আমার ক্যাম্পাসে প্রথম পহেলা বৈশাখ । সবমিলিয়ে দুবছর পর বৈশাখের আবরণে অসাধারণ সুন্দর অনুভূত হয়েছে ।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ নেতার লেখা প্রকাশ করায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস প্রতিনিধিকে মারধর
এছাড়াও দিনব্যাপী বর্ষবরণে অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল সকাল পৌনে দশটায় পুরাতন কলা ভবনের সম্মুখে মৃৎ মঞ্চে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন। বেলা এগারোটায় মহুয়া তলায় বাংলা বিভাগের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। বেলা সাড়ে তিনটায় জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ পৃথক পৃথকভাবে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।