ছাত্রলীগ নেতার লেখা প্রকাশ করায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস প্রতিনিধিকে মারধর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বিকালে স্যার এ এফ রহমান হলে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম ফারহান তানভীর নাফিস। তিনি ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সে এ এফ রহমান হল শাখার সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের অনুসারী। রিয়াজুল ইসলাম ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী।
ভুক্তভোগী রিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রিফাত জানান, গত ১১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নে ছয় দফা দাবিতে অনশনে বসা মহিউদ্দিন রনির অনশন ভাঙাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ছাত্রলীগ সভাপতি জয় সহ অনেকে গিয়েছিলেন। সেটা নিয়ে ডেইলি ক্যাম্পাসের ঢাবি প্রতিনিধি লিটন ইসলাম ‘৭৭ ঘন্টা পর রনির অনশন ভাঙ্গালেন ঢাবি ভিসি’ শিরোনামে একটি নিউজ করেন। এই নিউজে জয়ের নাম উল্লেখ ছিল।
আরও পড়ুন: ছাত্রীর অভিযোগে ঢাবি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষকে অব্যাহতি
জয়কে নিয়ে কেন নিউজ করা হয়নি এমন অভিযোগ করে অভিযুক্ত বলেন, সেখানে কেন জয়ের (ছাত্রলীগ সভাপতি) নামে নিউজ করা হয় নাই। এটা নিয়ে সেদিন আমার সাথে সে শুরু তর্ক করে। কিন্তু আমি বলি এই নিউজ আমার করা না। এটা ডেইলি ক্যাম্পাসের আরেক প্রতিনিধি লিটন ইসলামের করা। সেই নিউজে তো জয়ের নাম উল্লেখ আছে। পরে সেদিন আর এটা বেশিদূর গড়ায়নি।
কিন্তু গতকাল ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হল শাখা সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুনের একটি লেখা একটি আর্টিকেল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস প্রকাশ করে। সেটা নিয়ে আজকে সে আমার সাথে তর্ক শুরু করে। নাসিফ বলে, ‘তুই রিয়াজুল ইসলাম ভাইয়ের গ্রুপে থাকিস আর নিউজ করিস অন্য গ্রুপের নেতার (মুন)। আর নিজের গ্রুপের নেতাদের কোনো নিউজ করিস না!’ পরে আমি বলি ‘ভালো নিউজ হলে সবার নিউজই করি আমরা’।
মারধরের বর্ণনা দিয়ে গিয়ে রিফাত বলেন, পরে নাসিফ বলে, তোর গ্রুপের ‘নেতা যদি পাদও মারে’ তাহলে সেটা তোর নিউজ করতে হবে। তুই যদি আমার জুনিয়র হইতি তাহলে তোরে লাত্থি মেরে হল থেকে বের করে দিতাম। এটা বলার পর আমি বলি, তুই হল থেকে বের করে দিবি মানে হল কি তোর বাপের নাকি। এই কথা বলার পর নাসিফ আমার বুক ও মুখে ঘুষি মারে।
আরও পড়ুন: টিএসসিতে নামাজের স্থানে তালা, ছেলে-মেয়ে কেউই নামাজ পড়তে পারবে না
তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী নাফিস মারধরের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। ও তো আমার বন্ধু। ওকে মারতে যাব কেন?
এদিকে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি এই বিষয়ে শুনেছি। ওদের মধ্যে এমনিতেই একটু ঝামেলা হয়েছিল। নিউজের কোন বিষয় না। পরে ওদের দুইজনকে ডেকে এটা মীমাংসা করে দিয়েছি।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।