ঢাবি থেকে বিশেষ সম্মাননা পাচ্ছেন অভিনেতা রামেন্দু মজুমদার
মঞ্চ নাটকে অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা পাচ্ছেন প্রখ্যাত অভিনেতা, নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোক্তা রামেন্দু মজুমদার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ মঞ্চ নাটকে অবদানের জন্য এই বিশেষ সম্মাননা প্রদান করতে যাচ্ছে। আজ শনিবার বিভাগে সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মঞ্চ নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ এই সম্মাননা প্রদান করে আসছে। বিগত বছরগুলোতে ফেরদৌসী মজুমদার, আলী যাকের ও আতাউর রহমান বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হন।
করোনা মহামারির কবলে স্থগিত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ‘১৫তম কেন্দ্রীয় বার্ষিক নাট্যোৎসব-২০২১’ চলতি বছরের ২১ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই উৎসবেই প্রখ্যাত অভিনেতা, নির্দেশক ও সাংস্কৃতিক উদ্যোক্তা রামেন্দু মজুমদারকে সম্মাননা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী ২১ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় বিভাগের নাটমণ্ডল মিলনায়তনে নাট্যোৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আশিকুর রহমান লিয়নের সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধনী দিনে প্রখ্যাত এই অভিনেতার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি নাকি বেসরকারি— বিষয়টি আসলে কী?
বিভাগের অভিজ্ঞানে উল্লেখ করা হয়, সৃষ্টি-দ্যোতিতে ভাস্বর এক জীবনের মহিমার সমান উপমা হলো স্বয়ং রামেন্দু মজুমদার। তাঁর কর্ম-কীর্তির সুঘ্রাণ আমাদের দীপিত করে চলেছে। তাই আমরা রামেন্দু মজুমদারের কাছে ঋণী, আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। রামেন্দু মজুমদারের প্রতি এই উদিত দুঃখ ও দ্রোহের দেশের মানুষের অপার ঋণ, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার স্মারকচিহ্ন হলো ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ বিশেষ সম্মাননা-২০২১’।
রামেন্দু মজুমদার ১৯৪১ সালের জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের নাট্যরসপিপাসু জনচিত্তকে বিগত প্রায় পাঁচদশক জুড়ে উদ্বেলিত থিয়েটার স্কুলের করেছেন স্বকীয় নাট্য প্রতিভায়। বাংলাদেশের নাট্যমঞ্চ রামেন্দু মজুমদার মর্মরিত করেছেন এক অভিনব বাচনিক সৌকর্য ও স্ফুরণে।
থিয়েটার নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, থিয়েটার পত্রিকার সম্পাদক, অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি হিসেবে তাঁর সংযুক্তি বাংলাদেশের নাটক ও সংস্কৃতি চর্চাকে বেগবান করেছে।
রামেন্দু মজুমদার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা বিবৃতির একটি ইংরেজি সংকলন সম্পাদনা করে দিল্লী থেকে প্রকাশ করেন। দেশে ফিরে বিটপী অ্যাডভার্টাইজিং-এ পরিচালক হিসেবে যোগ দেন এবং প্রতিষ্ঠা করেন এক্সপ্রেশানস-যেখানে এখন তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত। বেতার ও টেলিভিশনে দীর্ঘদিন সংবাদ পাঠক হিসেবেও দায়িত্বপালন করেছেন।
বাংলাদেশের নাটককে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করাতে তিনি পালন করেছেন অগ্রণী ভূমিকা। প্রতিষ্ঠা করেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউটের বাংলাদেশ কেন্দ্র। বিশ্ব আইটিআই-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে তিনি বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছেন অনন্য গৌরব।
উল্লেখ্য, ১২ দিনব্যাপী (২১ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল) এই উৎসবে প্রতিসন্ধ্যা ৭টায় বিভাগের নাটমণ্ডল মিলনায়তনে বিভাগের শিক্ষকদের ২টি ও স্নাতক সমাপনী সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ৭টিসহ মোট ৯টি নাটক প্রদর্শীত হবে।