সেতুর বেহাল দশায় দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বৈচিত্র্যময় শিক্ষাঙ্গন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে বেহাল দশায় রয়েছে রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতুর আদলে নির্মিত চবি ঝুলন্ত সেতুটি।
আরও পড়ুন: সান্ধ্যকালীনে আগ্রহী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, দ্বিতীয়বার ভর্তিতে না কেন?
সরেজমিনে দেখা যায়, নিরাপত্তার জন্যে সেতুর দুই পাশে কাঁটাতার মোড়ানো রয়েছে। চারপাশে জন্মেছে অনেক ঝোপঝাড় এবং কাঠের পাটাতনে গজিয়েছে আগাছা। বেশ কয়েক জায়গায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। সেতুর চারপাশে শেওলা জমে বিবর্ণ হয়ে আছে। দূর থেকে বোঝার উপায় নেই, এখানে একটি ঝুলন্ত সেতু রয়েছে। এই বেহাল অবস্থায় সেতুটির এখন সংস্কার করা জরুরী প্রয়োজন।
এই সেতুর বিভিন্ন উপযোগিতা নিয়ে ‘সেতুর কান্না’ শিরোনামে একটি কবিতা লিখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। সেতুটিকে নিয়ে তার কবিতার সুন্দর বিবরণ পাঠকের মন ছুঁয়ে যাবে। কবিতাটির কিছু অংশ পাঠকের জন্য তুলে দেয়া হল:
বুকের পাজর ভেঙ্গে কাতরাচ্ছি
সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের পাশে।
কত পাখী, প্রজাপতি, সম্মানিত শিক্ষার্থী
শিক্ষকগণ আসা যাওয়া করে রাতদিন।
কেউ কি শোনে না আমার কান্না?
...
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে
অচিরেই শিক্ষক সমিতি নির্বাচন, চলছে প্রচারণা।
তবে কেউ আমায় সুস্থ্য করার প্রতিশ্রুতি দিলো না!
সন্ধ্যার আবছা আঁধারে প্রেমিক জুঁটিরা বসে
আমারই আশেপাশে।
আগে তারা আমার বুকে এসে
ঘনিষ্ঠ হয়ে ছবি তুলতো,
ওসব এখন বেদনাদায়ক স্মৃতি।
...
হায়রে মানুষের মন, হায়রে চবি প্রশাসন!
কেউ এই ছোট্ট ঝুলন্ত সেতুর আর্তনাদ শোনে না।
কেউ না।
আরও পড়ুন: কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের ১ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
এদিকে, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, আমরা চবি প্রশাসনকে এই প্রস্তাব দিয়েছি। তারা অনুমতি দিলেই আমরা সংস্কার কাজ শুরু করতে পারব।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া বিশেষ এ সেতুটি প্রয়াত উপার্চায অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফের সময়ে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর আদলে নির্মাণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক কৃতী শিক্ষার্থী এটি নির্মাণে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। ২০১২ সালে ঘূর্ণিঝড়ে সেতুটি আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পড় থেকে অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে চবির প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রিয় ঝুলন্ত সেতুটি। তাই সেতুটি সংস্কার করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করার প্রত্যাশা সবার।