হলে হলে শিক্ষার্থীদের মারধর-নির্যাতন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলছে প্রশাসন
দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন হলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগ অভিযোগ সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধেই। তবে মারধর কিংবা নির্যাতনের এসব অভিযোগকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
তথ্যমতে, গত মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পাকিস্তান ও ভারতের খেলা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বিজয় একাত্তর হলের এক শিক্ষার্থীকে যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের পি আর হাসান সাকিব নামে এক শিক্ষার্থী মারধর করেন। এ পোস্টে লাভ রিয়েক্ট দেওয়ার অভিযোগে আরও এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন একই বিভাগের রবিউল ইসলাম সানি। অভিযুক্ত দুজনেই ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী।
একইদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলেও ছাত্রীদের নির্যাদের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ হলে ভাত খাওয়ার আঞ্চলিক রূপ জানতে চাওয়ায় আয়েশা আক্তার রিজু নামে এক শিক্ষার্থী ও তার সহপাঠীকে রাতভর নির্যাতন করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের জুলি মারমা, তৃতীয় বর্ষের নাসরিন জাহান খুশি, মার্কেটিং বিভাগের জান্নাত নিপো ও রিনাকি চাকমা, দর্শন বিভাগের পূজা দাস। এরা সবাই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) গেস্টরুম বন্ধের খুশিতে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় স্যার এ এফ রহমান হলের তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী লালন হোসাইন, মার্কেটিং বিভাগের আরিফুল ইসলাম আরিফ ও আসিফ হোসাইন এবং মিউজিক বিভাগের ওয়াজিদ তাওসিফ।
এসব ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর যেমন একাডেমিক বিষয়ে দক্ষতা থাকা দরকার, তেমনি সাংগঠনিক নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চলা জরুরি। যদি কেউ গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকে, তাহলে খোঁজ নিয়ে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এসব ঘটনাগুলেকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে হল প্রভোস্টরা কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যেকোন অভিযোগ নিয়ে আসলে প্রশসান সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা এসব বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কাছে আসে না। এখানের অধিকাংশ অভিযোগ সমাধান হয়ে গেছে। হলগুলোর অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে মাঝেমধ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।