জীবন সংকটে রাবি শিক্ষার্থীরা, পাশে নেই প্রশাসন

জীবন সংকটে রাবি শিক্ষার্থীরা, পাশে নেই প্রশাসন
জীবন সংকটে রাবি শিক্ষার্থীরা, পাশে নেই প্রশাসন  © টিডিসি ফটো

করোনায় আটকে থাকা পরীক্ষা দিতে এসে জীবন সংকটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী। হঠাৎ নগরীতে করোনার বিরূপ প্রভাব ও চলমান লকডাউনে নাজেহাল জীবনযাপন করছেন তারা। এমতাবস্থায় তাদের পাশে নেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন!

প্রতিদিন নগরীতে করোনার প্রকোপ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি সমান তালে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ। অন্যদিকে চলমান লকডাউনের নিত্যদিনের খাদ্যসহ বিভিন্ন সমস্যা ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আটকে থাকা এই শিক্ষার্থীরা।

এমতাবস্থায় প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের করুণ আহাজারি কথা দেখা যাচ্ছে। দৃষ্টি গোচর হচ্ছে তাদের নাজেহাল জীবনযাপন চিত্র। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তেমন কোন তৎপরতা না দেখায় হতাশ এই শিক্ষার্থীরা!

করোনার ভয়াবহতার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রতিনিয়ত মসজিদের মাইক থেকে মৃত্যুর খবর আসে। নগরীর একটি মেসে বিভিন্ন বিভাগের ৩৫ জন শিক্ষার্থী অবস্থান করছি। সেই মেসের মালিক ও তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনের ব্যবধানে দুজনেই মৃত্যুবরণ করেছেন। এমতাবস্থায় তাদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এই শিক্ষার্থী।

রাবি শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মিশু প্রশাসনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, আপনারা হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন আগামী ২০ জুন থেকে পরীক্ষা নিবেন, ফলে শিক্ষার্থীরা আসতে শুরু করল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় আপনারা তা আবার পিছিয়ে দিলেন। আমরা দেখেছি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের নিজ বাসে করে নিরাপদে বাড়ি পৌছানোর ব্যবস্থা করেছেন। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছেন। যখন আপনার সন্তানেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। এমতাবস্থায় এসব শিক্ষার্থীদের দ্রুত নিরাপদে বাড়ি পৌছানোর ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।

আঞ্জুমান আশা নামের এক শিক্ষার্থী আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেছেন, আজ জ্বোহা স্যার জীবিত থাকলেও কি এমন করতেন!! যখন কতগুলো শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসে আটকা পড়েছে। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে অবস্থান করছেন। অথচ নিস্তব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো আজ দাঁড়িয়ে আছে!

এর আগে, গতকাল ৩০ জুন আটকে থাকা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে দ্রুত নিরাপদে বাড়িতে পৌছানোর দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশন। তারা অভিযোগ তুলে বলেন, সকল বিষয় নিয়ে প্রশাসন ব্যস্ত থাকলেও ক্যাম্পাসের প্রাণ স্বরূপ শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই! অথচ হটকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ বৃদ্ধি করে চলেছে প্রশাসন। এমতাবস্থায় এসব শিক্ষার্থীদের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছে ক্যাম্পাসের এই ছাত্র সংগঠন।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীরা রাজশাহী আসতে শুরু করে। ইতোমধ্যে রাজশাহীতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় লকডাউন ঘোষিত হলে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে আবার পরীক্ষা পিছানোর সিদ্ধান্ত নেয় সংশ্লিষ্টরা। ফলে আটকা পড়ে পরীক্ষা দিতে আসা অনেক শিক্ষার্থী। তবে এমতাবস্থায় দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের নিজ বাসে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ