রাবি ভিসি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি

অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা
অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি অভিযোগ তুলে বিতর্কিত নিয়োগপ্রাপ্ত একাংশের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। জিডিতে তিনিসহ তার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছেন।

আজ সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে নগরীর মতিহার থানায় এই জিডি করা হয় বলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সাধারণ ডায়রি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা অভিযোগ এসেছিল। সেটা জিডি হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। জিডি নং-১২৫৯।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক আদেশের মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়ােগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে এবং সে নির্দেশ আমলে নিয়ে তৎকালীন উপাচার্য সকল নিয়ােগ স্থগিত রাখেন। কিন্তু তার মেয়াদের শেষ দিন চলতি বছরের ৬ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে নিজ ক্ষমতাবলে ১৩৮ জনকে এ্যাডহক নিয়ােগ দেন।

নিয়ােগপ্রাপ্তদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে ৯ জন শিক্ষক আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়ােগে ১৯৭৩ সালের অ্যাক্ট সেকশন ২৯, ধারা সি-৪(৩) ভঙ্গ করে এ শিক্ষকদের নিয়ােগ দেওয়া হয়। পুরাে প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। গঠিত তদন্ত কমিটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নানা তথ্য-উপাত্ত সগ্রহ করেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেন।

জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সদ্য নিয়ােগপ্রাপ্তরা তখন থেকে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যােগদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথা আমার ওপর বারবার চাপ বৃদ্ধি করতে থাকে। গত ১৯ জুন তারিখ সকাল সাড়ে ৯টায় আমার বাসার গেটের সামনে ৫০-৬০ জন চাকুরিপ্রত্যাশী হট্টগোল করতে থাকে।

“এমন পরিস্থিতিতে আমার স্ত্রী-কন্যারা চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বাসার কম্পাউন্ডের মধ্যে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে রাখে। সেদিনের বিশৃঙ্খলকারীদের অন্যতম হল ফিরােজ মাহমুদ, মতিউর রহমান মূর্তজা প্রমুখ। এছাড়া, গত ২২ জুন সন্ধ্যা ৬টায় আমার বাসভবনের সামনে কয়েকজন এসে মহড়া প্রদর্শন করে, তাদের অন্যতম ছিলেন ইন্দ্রনীল মিশ্র এবং শাহরিয়ার মাহবুব।”

থানায় দেয়া অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯ জুন ফাইন্যান্স কমিটির সভা ও ২২ জুন সিন্ডিকেট সভাও তাদের বাধার কারণে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। গুরত্বপূর্ণ এই দুটি সভা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যায়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এবং আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন রক্ষার্থে বিষয়টি মতিহার থানায় সাধারণ ডায়রি হিসেবে অন্তর্ভূক্তকরণের জন্য প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রুটিন উপাচার্য।

প্রসঙ্গত, বিদায়কালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের ১৩৭ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। মন্ত্রনালয়ের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়োগাদেশ স্থগিত করায় ক্ষুব্দ হয়ে দ্রুত পদায়নের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন নিয়োগপ্রাপ্তরা।


সর্বশেষ সংবাদ