ঢাবির সমালোচনায় আইনি পদক্ষেপ বাক-স্বাধীনতা ও মুক্তচর্চার পরিপন্থি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ জুন ২০২১, ১০:০৫ AM , আপডেট: ২০ জুন ২০২১, ১০:০৭ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও উপাচার্যকে নিয়ে সমালোচনা কিংবা কোনো পত্রিকায় ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ হলে আইনি পদক্ষেপের বিষয়টিকে বাক-স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের মুক্তচর্চার পথে বাধা হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যরাসহ শিক্ষকবৃন্দ।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমের কাছে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। যাতে বলা হয়, গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শ্রদ্ধাশীল। একইসঙ্গে, কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমালোচনার রীতিনীতি ও মূল্যবোধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত আক্রমণ বা ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠানের মানহানি ঘটায়, তাহলে দেশের আইন যে তার প্রতিকার দেয় সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।
এ বিষয়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আরও বেশি সহনশীল হওয়ার পাশাপাশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং মুক্তচিন্তার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। আমি চিন্তার স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। যখন আমি উপাচার্য ছিলাম, তখন গণমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অসংখ্য প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। কিন্তু আমি কখনোই প্রতিবাদ করিনি। এটাই গণতন্ত্র এবং একটি সভ্য সমাজের সৌন্দর্য। গণ্যমাধ্যম কখনো কখনো ভ্রান্ত তথ্য সহকারে প্রতিবেদন প্রকাশিত করে। কিন্তু, সত্যকে অবশ্যই প্রকাশ্যে আসতে হয়। আর তাই, একটি গণতান্ত্রিক সমাজের সৌন্দর্য হলো সহনশীলতা বলেও এসময় উল্লেখ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় হলো মুক্তচিন্তার জায়গা উল্লেখ করে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সবারই সমালোচনা করার অধিকার আছে। কেউ যদি ভ্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করে তবে বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই প্রতিবাদ জানাতে পারে, তবে তা অবশ্যই সুষ্ঠু পদ্ধতিতে হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ আট বছর সাত মাস ধরে উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানানোর বিষয় উল্লেখ করে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ২১ শতকে এসে বিশ্ববিদ্যালয় বাক-স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে তারা বাক-স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, বিজ্ঞপ্তিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনা এবং মর্যাদার সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। একটি পত্রিকায় যে কার্টুন প্রকাশিত হয়েছে তার প্রতিবাদ উপাচার্য ব্যাক্তি হিসেবে প্রতিবাদ করতে পারতেন। সেটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাবধান করা মোটেও উচিত হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিণি।