অনুপম থেকে মুজতাবা, ইসলাম গ্রহণ করে জাবি ছাত্রের স্ট্যাটাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওমুসলিম ছাত্র
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওমুসলিম ছাত্র  © টিডিসি ফটো

হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। সরকারি এক হলফনামায় স্বাক্ষর করে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। তার নাম অনুপম কুমার পাল। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তিনি তার নাম দিয়েছেন মুজতাবা রাহমান তাহমিদ। মুজতাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, আমি স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে অন্যের বিনা প্ররোচনায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। ইসলামের সকল নিয়ম-কানুন জেনে বুঝে এক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন, তার পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন এবং তার প্রেরিত রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমি ইসলামের সকল বিধিবিধান পালন করছি।

হলফনামায় নাম পরিবর্তনের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, অনুপ কুমার পালের পরিবর্তে মুজতবা রাহমান তাহমিদ সব সংশোধন করে নেবেন এবং এ নামেই এখন থেকে সব জায়গায় তিনি পরিচিত হবেন। তিনি তার সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রে নাম পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দিয়েছেন।

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘সকল প্রশংসা মহান স্রষ্টার যিনি আমাকে এই সত্য উপলব্ধি করিয়েছেন। সবার ভাগ্যে এই সত্যের সন্ধান জোটে না, তাই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।

২০০৯ সাল থেকে ইসলামের উপর বিশ্বাসের শুরু। এই বিশ্বাসের পেছনে পৃথিবীর কেউ বা কোন কিছু দায়ী না। কেউ আমাকে ওইরকমভাবে ইসলামের দাওয়াতও দেয়নি। স্রষ্টার কৃপায় নিজের বুদ্ধি, বিবেক দিয়ে পড়ে, জেনে বুঝেই এগিয়েছি। পথে অনেক বাধাবিপত্তি ছিলো। আল্লাহর সাহায্যে একটার পর একটা পাড়ি দিয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।

২০১০-এ যখন প্রকাশ করলাম, তখন দেখলাম ভুল সময়ের স্বীকার হয়েছি। তখন সাবালক ছিলাম না, তাই আমার কথার দাম ছিল না। তাই পরিস্থিতি অনুকূলে না দেখে চুপ হয়ে রইলাম। কিন্তু এতটা দীর্ঘ সময় যে কেটে যাবে, ভাবতে পারিনি। যাইহোক এতটা দীর্ঘ সময় ধরে এক চুল পরিমাণ বিশ্বাসের ঘাটতি হয়নি, এক মুহুর্তের জন্য ও না। এই বিশ্বাস নিয়েই আজীবন থাকতে চাই। জানি না সামনের পথটা কেমন কঠিন হবে। এখনো বেকার, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হইনি পুরোপুরি। নিশ্চয়ই আল্লাহ সাহায্য করবেন।

আর জানি পাশে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী পাবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আজীবন এই বিশ্বাসের উপর অটল থাকতে পারি আর এই বিশ্বাসের প্রচার করতে পারি। জানি আমার এই বিশ্বাসের অসংখ্য বিরোধিতা করার লোক পাবো আশেপাশে। ধর্মীয় স্বাধীনতা সাংবিধানিকভাবে আমার প্রাপ্য। তাই বিশ্বাসের ব্যাপারে আমার সাথে কথা বলতে পারেন কিন্ত দয়া করে হেনস্থা করবেন না যেখানে সেখানে।’’


সর্বশেষ সংবাদ