ধর্ষকরা যেন কোন পরিচয়ে ছাড়া না পায়: ঢাবি সাদা দল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২০, ০৭:১৯ PM , আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০, ০৮:৩৬ PM
ধর্ষণসহ দেশে নারীর প্রতি ক্রমাগত সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে এসব ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। সেই সাথে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত এবং কোনো পরিচয়ে যেন ধর্ষকরা ছাড়া না পেয়ে যায় সে দাবি জানিয়েছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যেও বাংলাদেশে ধর্ষণ, নির্যাতনসহ নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা ব্যাপকহারে বৃদ্ধির ঘটনায় আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। আমরা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের সকল ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
বিৃবতিতে আরও বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, দেশে ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণসহ নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়ত আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী নেতাকর্মীদের দ্বারা গৃহবধুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, খাগড়াছড়িতে আদিবাসী প্রতিবন্ধী কিশোরীকে গণধর্ষণ, নওগাঁতে গির্জায় আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণসহ সারাদেশে সংঘটিত হয়েছে নারীর প্রতি সহিংসতা। এরই মধ্যে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তাতে আমরা বাকরূদ্ধ। ধর্ষণের উৎসবে নারী ও শিশুর চিৎকার এবং মা-বাবার আহাজারিতে দেশের বাতাস আজ ভারী হয়ে উঠেছে। আরো উদ্বেগের বিষয় হলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় সরকার সমর্থক দলীয় নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
রাজনৈতিক দুর্বৃত্ততন্ত্র এর জন্য দায়ী উল্লেখ করে বিবৃতিতে অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ক্ষমতার দম্ভ ও রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধের দায়মুক্তি ইত্যাদিসহ বিকৃত ভোগের হাতছানিতে কিছু মানুষের ভেতরকার মনুষ্যত্বকে মেরে পুনর্জন্ম দিচ্ছে ধর্ষক ও নির্যাতকের। ক্ষমতার দণ্ডধারীদের অনেকেই আজ আমাদের প্রিয় জনপদকে উপদ্রুত ও আতঙ্কিত করে ফেলেছে। আমরা মনে করি এদের নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের নিরসন ঘটবে না।
এসব ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিৃবতিতে আরো বলা হয়, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর পাদদেশে দাঁড়িয়ে আমরা এদেশে কোনো ধর্ষিত, নিপীড়িত নারী ও শিশুর আর্তচিৎকার শুনতে চাই না। আমরা চাই নারী-শিশুসহ সকলের জন্য একটি নিরাপদ আবাসভূমি। আর এজন্য আমরা চাই ধর্ষক ও নিপীড়কদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। রাজনৈতিক বা অন্য কোনো পরিচয়ে কোনো ধর্ষক বা অপরাধী যেন ছাড় না পেয়ে যায় সেটি নিশ্চিত করাসহ অপরাধীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের জন্য আমার সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে সাদা দলের যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক মো লুৎফর রহমান এবং অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানসহ অন্যান্যের মধ্যে স্বাক্ষর করেন, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল মোজাদ্দেদী আলফেছানী, অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আমিন, ইসরাফিল প্রামাণিক, ড. মো. মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রশীদ, অধ্যাপক ড. লায়লা নূর ইসলাম, অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার বড়ূয়া, অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া, অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান মিয়াজী, অধ্যাপক এবিএম শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, অধ্যাপক তাহমিনা আখতার টফি, ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, ড. আবদুল আজিজ, মোহাম্মদ দাউদ খান, মো. রফিকুল ইসলাম, ড. নেভিন ফরিদা, ড. আরিফ বিল্লাহ, সাবরিনা শাহনাজ প্রমুখ।