বিভাগের ‘সেকেন্ড বয়’ রিফাত এখন শুধুই ছবি

আমজাদ হোসেন রিফাত
আমজাদ হোসেন রিফাত  © টিডিসি ফটো

শিক্ষা জীবনে রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। দেশের সেরা বিদ্যাপীঠে পড়াশোনা তো বটেই, এর মধ্যেও ছিলেন সেরাদের সেরা। কিন্তু গোটা জাতির কাছে আর সেরাটা হয়ে ওঠা হলো না। এর আগেই মোটরসাইকেলের সঙ্গে কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে মৃত্যু হলো। চলে যাওয়ার গল্পটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন রিফাতের। রবিবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর জিদ্দাবাজার এলাকায় মারা গেছেন তিনি।

ঢাবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন রিফাত। ছিলেন শহীদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র। রিফাতের সহপাঠী এবং বিভাগের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, রিফাত ছিল অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির। বন্ধুদের সব সময় মাতিয়ে রাখতেন তিনি। তিনি তার ক্লাসের রিপ্রেজেনটেটিভ ছিলেন। সম্প্রতি বিভাগের পরীক্ষায় তিনি দ্বিতীয় হয়েছিলেন।

রিফাতের বন্ধু ঢাবির আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তারেকুজ্জামান বলেন, রিফাতের অচরণ আমাকে সব সময় মুগ্ধ করত। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া অবস্থাতেই তার সাথে আমার পরিচয়। অত্যন্ত মেধাবী, চঞ্চল, অপটিমিস্টিক প্রকৃতির ছিলো সে। তার মৃত্যু কখনো ভুলতে পারবো না। তার সাথে স্মৃতিগুলো এখন শুধু নাড়া দিচ্ছে। আমি মনে করি, তার মতো শিক্ষার্থী শুধু একটি এলাকার জন্য নয়; পুরো জাতির জন্যই ক্ষতির।

বাইকপ্রিয় রিফাত

 

আমজাদ হোসেন রিফাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান জানান, বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন রিফাতের মৃত্যুর খবর শুনেছি। সে অত্যন্ত ভালো ছাত্র ছিল। তার ভবিষ্যৎ খুব সুন্দর হবে- এরকম আমরা আশাবাদী ছিলাম। সে ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভ ছিলো।এই করোনাকালে আমার সাথে সিআরদের মিটিংয়ে তার স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকা ছিল। সে শুধু একজন ভালো ছাত্র ছিলো এরকম নয়; সে একজন ভালো ফুটবলার ছিল। তার পারফরম্যান্স আমাদেরকে মুগ্ধ করতো। তার সাথে আমার অনেক স্মৃতি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি তার মামার সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি জেনেছি। রিফাত’র মৃত্যুতে আমরা এক প্রতিভাবান ছেলেকে হারালাম। তার মৃত্যুতে পরিসংখ্যান বিভাগ শোকাহত। রিফাতের পরিবারের সাথে আমরা যোগাযোগ করবো। তার পরিবারের যে কোন সহযোগিতা ও প্রয়োজনে পরিসংখ্যান বিভাগ সব সময় পাশে থাকবে।

বন্ধুদের সঙ্গে আমজাদ হোসেন রিফাত

 

প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর জিদ্দাবাজার এলাকায় ওভারটেকিং করতে গিয়ে রিফাতকে বহন করা মোটরসাইকেল ও কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই রিফাত ও তার বন্ধু তারেক রহমান নিলয়ের মৃত্যু (২২) হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় নিলয়ের ছোট ভাই তানজিলুর রহমানকে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনিও মারা যান।

রিফাতের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় বিভিন্ন গ্রুপেও সড়ক দুর্ঘটনার ছবি শেয়ার করে শোক জানিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ