ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের আচরণবিধি লঙ্ঘনের পালটাপালটি অভিযোগ
দুর্গাপূজার ছুটি শেষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের প্রচারণায় নতুন উদ্যমে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা, জমে উঠেছে নির্বাচনি আবহ। তবে এরই মধ্যে প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘনে একে অপরের বিরুদ্ধে পালটাপালটি অভিযোগ এনেছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ এবং বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ নির্বাচন কমিশনের কাছে পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়।
ছাত্রশিবিরের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা ক্লাসরুমে প্রবেশ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন, আরবি বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা প্রদান, নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে প্রচার-প্রচারণা চালানো এবং রাকসুর ভোটার নন এমন ব্যক্তিরাও তাঁদের প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে ছাত্রদল অভিযোগ করেছে, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থীজোট' প্যানেলের প্রার্থীরা ও প্রার্থীদের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের সমর্থকরা বিভিন্ন হল ও বিভাগে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোটারদের খাবার উপহার ও বিশেষ উপহার প্রদান করছে যা নির্বাচনি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডকে নষ্ট করছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়ার প্রস্তাব অনুমোদনের সম্ভাবনা কতটুকু?
সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, এর আগেও ছাত্রদল বিভিন্নভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু আমরা তখন কোনো লিখিত অভিযোগ দিইনি। আমরা চাই, রাকসু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক এবং এখানে যেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়, এ জন্য আজ এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছি।
ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের সহ সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, আমরা বারবার নির্বাচন কমিশনারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছি যে বিভিন্ন প্যানেল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। তারা বিভিন্ন হলে হলে শিক্ষার্থীদের প্রলুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন উপহার-উপঢৌকন, খাবারের প্যাকেট ইত্যাদি পাঠাচ্ছে। আমরা এগুলোর প্রমাণ হাতে পেয়েছি, তাই আচরণবিধিকে সম্মান জানিয়ে আমরা আজ অভিযোগ জমা দিয়েছি। ছাত্রশিবির আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে এটা হাস্যকর, এর কোনো প্রমাণ নেই। আমরা যে অভিযোগ জমা দিয়েছি, তার সঙ্গে প্রমাণও যুক্ত করেছি।
তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অর্থ বা উপঢৌকনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে চান, তাদের বলতে চাই—রাবির শিক্ষার্থীরা মেধাবী ও বিবেকবান। এক প্যাকেট খাবার বা উপঢৌকনের বিনিময়ে তারা তাদের বিবেক বা ভোট বিক্রি করবে না। তাই কালো ছড়াছড়ি বন্ধ করুন, আসুন সবাই মিলে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য রাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করি।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, আজ ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল আমাদের কাছে একটি লিখিত স্মারকলিপি দিয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, সেগুলো আমরা দেখব।