২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭

ক্লাস, পরীক্ষা, গবেষণা— সব চাপে কুলহারা শিক্ষকরা, তবুও নেই ‘টিএ’ নিয়োগের উদ্যোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ও কার্জন হল  © ফাইল ছবি

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি বিভাগ-ইনস্টিটিউট থেকে আসা খাতা, থিসিস, মনোগ্রাফ আমার মূল্যায়ন করতে হয়। এত বেশি খাতা দেখতে গিয়ে মনোযোগ ধরে রাখা যেমন মুশকিল, ঠিক তেমনই মূল্যায়ন করাও কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এগুলো দেখে নম্বরও মিলিয়ে ফলাফলটা পর্যন্ত রেডি করতে হয়। সেই সঙ্গে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা তো রয়েছেই। নিজের লেখালেখি, গবেষণাসহ আরও নানা কাজের জন্যও ব্যস্ত থাকতে হয়। ২২ বছর ধরে শিক্ষকতার পর একক অফিস কক্ষ পেয়েছি। তবে জানিনা আর কতকাল পার হলে একজন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (টিএ) পাব।’ এভাবেই নিজের কথাগুলো দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম। 

অধ্যাপক মঈনুল ইসলামের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অ্যাকাডেমিক ও গবেষণামনা শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষকেরই আফসোস ও আক্ষেপের জায়গা হল এই ‘টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের শূন্যতা’। শিক্ষকদের বড় একটা অংশই দেশের বাইরে থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে থাকেন। সেসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক, এমনকি বাংলাদেশের কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও টিএ নিয়োগের নজীর থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রাচীন ও শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠে বিষয়টি কোনো চিন্তা-ভাবনার দেখা মেলেনি। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগে ‘অধ্যাপক সহকারী’ এবং রসায়ন বিভাগে ‘চেয়ারম্যান সহকারী’ নামে দুটি পদ রয়েছে। যা অন্যান্য কোনো বিভাগেই নেই বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভাগ বা ইনস্টিটিউটগুলোতে প্রয়োজনের আলোকে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, কানাডা, মালেশিয়া, মিশর, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল অধিকাংশ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট বা টিএ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের ক্লাস নেওয়া, কুইজ বা অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি, পরীক্ষা কিংবা ল্যাব তদারকির মতো কাজগুলোতে তারা সহায়তা করে থাকেন। এর ফলে শিক্ষকরা গবেষণা ও উচ্চমানের শিক্ষাদানে বেশি মনোযোগ দিতে পারেন। 

একইসাথে শিক্ষার্থীরাও বাড়তি সহায়তা পেয়ে উপকৃত হয়, কারণ টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টরা সাধারণত টিউটোরিয়াল ক্লাস বা আলোচনা সেশনের মাধ্যমে জটিল বিষয় সহজ করে বোঝাতে সহায়তা করে। মাস্টার্স বা পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা যখন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন, তখন তারা ভবিষ্যতে শিক্ষকতা ও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। অনেক ক্ষেত্রে এটি তাদের জন্য এক ধরনের প্রশিক্ষণ হিসেবেও কাজ করে।

ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, কানাডা, মালেশিয়া, মিশর, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুরসহ পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল অধিকাংশ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট বা টিএ নিয়োগ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের ক্লাস নেওয়া, কুইজ বা অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি, পরীক্ষা কিংবা ল্যাব তদারকির মতো কাজগুলোতে তারা সহায়তা করে থাকেন। এর ফলে শিক্ষকরা গবেষণা ও উচ্চমানের শিক্ষাদানে বেশি মনোযোগ দিতে পারেন।

পাশাপাশি আর্থিক দিক থেকেও টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টশিপ অনেককে সহায়তা করে। কারণ এ পদের নিয়োগ সাধারণত বৃত্তি বা পারিশ্রমিকের মাধ্যমে হয়ে থাকে। ফলে শিক্ষার মান উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের সরাসরি সহায়তা এবং ভবিষ্যৎ শিক্ষক ও গবেষক তৈরির ক্ষেত্রে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠান— তিন পক্ষই উপকার ভোগ করেন। শিক্ষকের ক্ষেত্রে পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল নেওয়া বা ল্যাব তদারকির মতো কাজ ভাগ হয়ে যায়, ফলে তিনি গবেষণা ও উন্নত শিক্ষাদানে বেশি সময় দিতে পারেন। শিক্ষার্থীরা বাড়তি দিকনির্দেশনা পায়, যা তাদের শেখার মান উন্নত করে। আর টিএ হিসেবে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য এটি ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা হিসেবে কাজ করে, পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহায়তাও মেলে। 

৩৭ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করছেন অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা। তিনি জাপানের উৎসুনোমিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তখন তিনি নিজেও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের (রিসার্চ সুপারভাইজর) অধীনে টিএ পদে কাজ করেছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ বছরের শিক্ষকতায় তিনি কোনো টিএ পাননি। শ্রেণি ও পরীক্ষা কার্যক্রম, গবেষণা, লেখালেখি, হলের প্রভোস্টশিপ, আরবরি কালচারাল সেন্টার পরিচালনাসহ আরও নানামুখী কাজ তাকে একার করতে হয়েছে। 

এ বিষয়ে আক্ষেপ জানিয়ে তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে সহযোগিতা করার মত কেউ নেই। বিশেষ করে সায়েন্সে। শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, সারা দেশেই সায়েন্স অবহেলিত। যা মোটেই কাম্য নয়। আমি স্কলারশিপ পেয়ে জাপানে পড়াশোনা করেছি। সেখানে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে আমি নিজেই কাজ করেছি। আমার কাজ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে অ্যাসিস্ট করা এবং জুনিয়র গবেষকদের সহযোগিতা করা। কারণ, অধ্যাপক তো সবসময় ফ্রি থাকেন না। 

তিনি আরও বলেন, জাপান, আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে স্কলারশিপে যাওয়ার পর উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি সুপারভাইজরকে অ্যাসিস্ট করার সিস্টেম চালু রয়েছে। এতে করে গবেষণা কোয়ালিটিফুল হয়, সুপারভাইজরেরও রিলিফ হয় এবং যিনি অ্যাসিস্ট করেন তারও দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী-বিএনপিপন্থী দুই অধ্যাপকের হাতাহাতি, ধস্তাধস্তি ও মগ-পিরিচ ছুঁড়ে মারার অভিযোগ

টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পৃথিবীর বহু দেশ ঘুরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় দেখার সুযোগ আমার হয়েছে। অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ডসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট বা টিএ পদটা আছে। টিএ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি সেতুবন্ধন সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, অনেক সময় শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যা নিয়ে বা কিছু জানতে শিক্ষককে না পেলেও কিংবা অ্যাপ্রোচ করতে অস্বস্তি বোধ করলে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। 

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে টিএ পিছিয়ে পড়া বা সব শিক্ষার্থীকেই হেল্প করতে পারে। শিক্ষককে গবেষণায় সহযোগিতা, শিক্ষার্থীদেরকে নানা কাজে কো অপারেট করা, ক্লাসরুম ম্যানেজ করা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন বা থিসিস পেপার প্রস্তুতে শিক্ষার্থীদেরকে গাইড করার মাধ্যমে একজন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের এমন অভিজ্ঞতা অর্জন হতে পারে যে, তিনি ভবিষ্যতে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে সাহস করে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও লাভবান হয়। সার্বিকভাবে শিক্ষার মান বৃদ্ধি হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেওয়া হবে কি না, সেটা সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেবে। যদি কেউ বিষয়টিকে উপলব্ধি করে, তাহলে সিন্ডিকেটে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা কার্যকরী হলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।-অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের করণীয় সম্পর্কে মতামত জানিয়ে মঈনুল ইসলাম আরও বলেন, কেন আসলে টিএ প্রয়োজন সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে উপলব্ধি করতে হবে। কোন কোন বিভাগে কি পরিমাণ প্রয়োজন হতে পারে এবং ফান্ডিং ও এ ব্যাপারে কি কি মেকানিজম প্রস্তুত করতে হবে সেটা বিবেচনা করতে হবে। একজন টিএর কাজের ক্ষেত্র, টেইনিং এবং মনিটরিংসহ নানা বিষয়ে ভাবতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়াতে এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রপার সার্ভিস পেতে হলে টিএ নিয়োগের বিষয়ে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাবতে হবে। 

এ বিষয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত অ্যাকাউন্টিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আল আমিনের সঙ্গে। মতামত জানিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন বলেই উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এটা রাখা হয়। বৃহৎ স্বার্থেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এটা অ্যারেঞ্জ করে থাকে। এতে পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষকদের গবেষণায় মনোনিবেশের সুযোগ বাড়ে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের সম্মানী সন্তোষজনক না থাকায় তাদের অনেককে শিক্ষকতার পাশাপাশি অন্যান্য কাজ করতে হয়। 

তিনি বলেন, একজন শিক্ষককে গবেষণার পর্যাপ্ত পরিবেশ নিশ্চিতসহ সব সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে শিক্ষার মান আরও বাড়বে। এর মধ্যেই টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। মেধাবী একজন শিক্ষার্থীকে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ দিলে সে শুধু শ্রেণি কার্যক্রম ও পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন সংক্রান্ত কাজেই শিক্ষককে সহযোগিতা করবে, বিষয়টা এমন নয়। সে অভিজ্ঞ একজন গবেষক হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক হওয়ারও যোগ্যতা অর্জন করবে। 

মতামত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, বহির্বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিএ নিয়োগের প্রচলন রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এটির প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু আমার জানামতে, আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ বা কোনো নীতিমালায় এ সংক্রান্ত কোনো বিধান নেই। আমার মতে, প্রয়োজন সাপেক্ষে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আইন করে এটা করা যেতে পারে। তাছাড়া, ফান্ডিংয়েরও একটা বিষয় আছে, সে ব্যাপারেও নতুন করে চিন্তা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যারা মেধাবী এবং অর্ধনৈতিকভাবে অসচ্ছল তাদেরকে বিবেচনা করা যেতে পারে। 

শুধু শিক্ষকরাই নন, বরং ঢাবি শিক্ষার্থীরাও টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট ও রিসার্চ এসিস্ট্যান্টের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছেন। যা বাস্তবায়নের রূপরেখা বর্ণনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং রিসার্চ ফেলোশিপ অফার করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭টি গবেষণা কেন্দ্রে অন্তত ৫ জন করে ২৮৫ জন শিক্ষার্থী এবং ৮৩ টি বিভাগের গড়ে ১০ জন শিক্ষকের জন্য একজন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং একজন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখার মাধ্যমে ১৬৬০ জন শিক্ষার্থীকে একোমোডেট করা সম্ভব এবং গবেষণার ইন্সেন্টিভ দেওয়া সম্ভব। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পার্টটাইম জবসহ গবেষণানির্ভর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। 

বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যাস্ট পদটি রয়েছে। তার মধ্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অন্যতম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসাইন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএ হিসেবে মাস্টার্সের সেরা শিক্ষার্থীদেরকে রাখা হয়। সাধারণত অনার্সের পর সর্বোচ্চ ফলধারী শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স বিদেশে করার প্রবণতা বেশি। আমি এক দশক আগে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করার পর টিএ রাখার বিষয় সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছিলাম। এরপর আমাদের এখানে এটা চালু হয়। এটা আসলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠান সবাইকে লাভবান করে। কারণ, ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্টরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করে তখন রিসার্চ এবং পাবলিকেশন সমৃদ্ধ হয়। অন্যান্যরাও এ বিষয়ে চিন্তা করতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মাদ বলেন, টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের বিষয়ে কোনো ফোরামে এখনো আলোচনা হয়নি, বিশেষ করে সিন্ডিকেট সভায় হয়নি। ভবিষ্যতে আলোচনা হলে বা কোনো সিদ্ধান্ত আসলে জানানো যাবে। 

টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী ভাবছে তা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেওয়া হবে কি না, সেটা সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেবে। যদি কেউ বিষয়টিকে উপলব্ধি করে, তাহলে সিন্ডিকেটে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা কার্যকরী হলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।