আমির হামজা ও ফজলুর রহমানকে এক হাত নিলেন সর্ব মিত্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় আলোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজা ও বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের কড়া সমালোচনা করেছেন ডাকসু কার্যনির্বাহী সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা। আজ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তাদের প্রজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সর্ব মিত্র চাকমা বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আজান বন্ধ ছিল, এরকম বক্তব্য প্রদান করেছেন জামায়াতে ইসলামী থেকে সংসদ সদস্য নোমিনেশনপ্রাপ্ত ওয়াজকারী আমির হামজা। তিনি আরও বলেছেন যে, ছাত্রশিবির ডাকসুতে জয়লাভ করার পর সেসব হলে আজান শুরু হয়। হাসিনার দুঃশাসনের আমলে জসিমউদ্দিন হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে মাইকে আজান দিতে ছাত্রলীগ বাধা দিলেও জুলাই বিপ্লবের পরপরই এ বাঁধা দূরীভূত হয়।
মহসিন হলে এরকম কোন বাঁধার কথা জানা যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ডাকসু নির্বাচনের সাথে আজান চালু হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। এধরনের মিথ্যাচার হাসিনা আমলের কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষের ভয়াবহতাকে লঘু করে ও হাসির পাত্রে পরিণত করে। একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্য মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তি যখন এরকম বক্তব্য প্রদান করেন, তখন সে দলের নীতিনির্ধারক যারা তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাদের প্রজ্ঞা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
আরও পড়ুন: প্রাপ্যতা নেই, তবুও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সম্মানীতে ব্যয় দেড় কোটি টাকা
সর্ব মিত্র চাকমা আরও বলেছেন, বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের নেতিবাচক অর্থে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাদ্রাসায় পরিণত হয়েছে’ এ কথা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি অপমান না, এটা আলিয়া ও কওমী মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত ও গ্রাজুয়েট কোটি কোটি বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীকেও অপমান করা। যারা মনে করেন, মাদ্রাসা ট্যাগ দিয়ে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অপমান করা যায়, তারা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাথে কি ধরনের বৈষম্য করেন তা সহজেই অনুমেয়।
দেশের মূলধারার রাজনীতিবিদরা যখন এ ধরনের ঘৃণা, বিদ্বেষ ও বৈষম্যের রাজনীতি করেন, এটা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে না, তখন বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের শংকিত হতে হয় বলে মন্তব্য করেন সর্ব মিত্র চাকমা। তিনি বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মতো বাংলাদেশের প্রান্তিক অঞ্চলের জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন সদস্য হিসেবে আমি মার্জিনালাইজেশনের বেদনা খুব স্পষ্টভাবেই বুঝতে পারি। যারা মাদ্রাসা নিয়ে ঘৃণা ছড়ায়, তারাই আমাদের স্বকীয়তা-সংস্কৃতি মুছে ফেলে বাঙালি হয়ে যেতে বলে।