প্রশ্ন ফাঁসের ব্যর্থতা ঢাকতেই ঢাবি প্রশাসনের দায়সারা বক্তব্য : ভিপি নুর (ভিডিও)
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৪৮ PM , আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৩ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর বলেছেন, ২০১৩-১৪ সেশন থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে আসলেও প্রশাসন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সবসময় দায়সারা বক্তব্য দিয়েছে। কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। জালিয়াতির ঘটনা ও প্রশ্ন ফাঁসকারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি নয়, সাংবাদিকরা তাদের খুজে বের করেছে। এটা প্রশাসনের দুর্বলতা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি একথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। কর্মসূচি থেকে দাবি মানা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
নুরুল হক নুর বলেন, প্রয়োজন কোন আইন মানে না। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে কোন কালক্ষেপন না করে জালিয়াতির সঙ্গে যুক্তদের এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে বের হয়েছেন তাদের সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। অতিদ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এসময় প্রত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জালিয়াতের নাম প্রকাশ করারও আহবান জানান তিনি।
ডাকসু ভিপি বলেন, গত বছরে ঘ-ইউনিটের পরীক্ষা নিয়ে যখন বিভিন্ন প্রত্র-প্রত্রিকায় লেখা-লেখি হচ্ছিল, তখন আইন বিভাগের একজন ছাত্র আখতার হোসেন প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম অনশন করেছিলেন। প্রশাসন প্রথম দায়সারা বক্তব্য দিয়েছিল যে, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে পড়ে ঘ-ইউনিটের পরীক্ষা নিয়েছিল।
তিনি বলেন, ছাত্রদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে, সেটা যেখানেই হোক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশকে স্বাধীন করেছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী প্রশ্ন ফাসেঁর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হোসেন বলেন, ‘যারা ভর্তি জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে, তারা আজ আমাদের সামনে বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করে। যারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে তাদের শুধু বহিষ্কার করলেই চলবে না, যারা তাদের সাথে জড়িত তাদের ও ব্যবস্থা নিতে হবে।’
অপর যুগ্ম আহবায়ক মুঁহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ‘যারা ভর্তি জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে তারা রাচনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। আমরা রাজনৈতিক সংগঠনকে বলতে চাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা এমনভাবে নিশ্চিত করতে হবে যাতে বাইরের কেউ দেখার কোন সুযোগই না পায়। প্রশ্নের ব্যাপারে প্রশাসনকে সচেতন হওয়ার জন্য আমরা আহবান জানিয়েছিলাম।এই জালিয়াতরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার অধিকার রাখে না। তাদের আজ থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হলো। তাদের কে হল থেকে আপনারা বের করে দিন।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এতে ছাত্র সমাজ কিন্তু বসে থাকবে না। প্রত্যেক বিভাগে এবং অনুষদে জালিয়াতদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হবে, তাদেরকে বের করে দিতে হবে। ২০১৮ সালে একজন আখতার অনশন করেছিল কিন্তু আজ শত শত আখতার একত্রিত হয়েছে। তাদের দাবি একটাই, যারা ভর্তি জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে তাদের বহিষ্কার করতে হবে।’
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। সেটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভিসির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে জালিয়াতদের বহিষ্কার ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।