পোষ্য কোটা নিয়ে রাবি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান শিক্ষার্থীদের
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫৩ PM , আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৭ PM
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকতাদের পুত্র-কন্যাদের কোটা বাতিল করে কেবল সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের পুত্র-কন্যাদের জন্য ১ শতাংশ কোটা পুনঃনির্ধারণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন। তবে রাবি প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১০টার ভেতরে এই ১ শতাংশ বাতিল না করলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১০টায় সকল প্রশাসনিক ভবনে তালা মারার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার।
আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি কমিটির জরুরি সভায় সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের পুত্র-কন্যাদের জন্য ১ শতাংশ কোটা পুনঃনির্ধারণ করেছে রাবি প্রশাসন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের কোটা বাতিল করা হয়েছে। কেবল সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের পুত্র-কন্যাদের জন্য ১% কোটা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
রাবি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম। ১ শতাংশও পোষ্য কোটায় আসন বরাদ্দ রাখতে দেব না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাবার দৈনিক ইনকাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। তাদের থেকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী না কর্মচারীরা।
তিনি শহিদের কসম নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রশাসনের হাতে এখনো ১৬ ঘণ্টা সময় আছে ভাবার জন্য। এরপর আর সময় দেয়া হবে না। আগামীকাল ঠিক ১০টায় অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হবে। পোষ্য কোটা বাতিল না হলে অচল করে দেয়া হবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় হাসান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ ভেরিফাইড আইডিতে লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউই সুবিধাবঞ্চিত নন। বেতন ছাড়াও তারা চিকিৎসা, গৃহঋণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সুবিধা পান। কোনো কোনো পরিবারে একাধিক চাকরিজীবী রয়েছেন। তাদের কোন কোটার প্রয়োজন নেই। যদি কোটা দিতে হয় তবে দিনমজুরদের কোটা দিতে হবে। রিকশাচালক সন্তানদের কোটা দিতে হবে। যারা গ্রামে মাছ বিক্রি করে সংসার চালায় তাদের সন্তানদের কোটা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করলে কোটা দিতে হবে কেন? এর কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ আছে কি? এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ভর্তি কমিটি মনে করেছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সন্তানদের এক পার্সেন্ট কোটা রাখা যৌক্তিক। নানা কারণে তারাও বঞ্চিত। যদিও তারা অনগ্রসর না। তবে অন্তত কিছুটা হলেও তারা পিছিয়ে পড়া। তাদের যে ইনকাম তাতে তাদের সন্তানদের বাইরে পড়ানো সম্ভব না। মানবিক কারণে তাদের এক পার্সেন্ট কোটা রাখা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানাচ্ছি তারা যাতে এই দাবিটা মেনে নেয়।