ক্যাম্পাস থেকে অবৈধ ভাসমান দোকান উচ্ছেদে বারবার ব্যর্থ ঢাবি প্রশাসন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ PM , আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১১ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাস থেকে অবৈধ ভাসমান দোকান সরাতে প্রশাসন একাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর একাধিক উচ্ছেদ অভিযান সত্ত্বেও, ক্যাম্পাসটি আবারও অস্থায়ী দোকানদারদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন দোকান বসছে, যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য ও পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সরজমিনে আজ সোমবার (২ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর এবং গণতন্ত্র ও মুক্তি তোরণের আশপাশে ঘুরে প্রায় ১০০টি অবৈধ দোকান দেখা গেছে।
এসব দোকান পথচারী এবং যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, যার ফলে দিনদিন যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে অবৈধ দোকানের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যেখানে অস্বাস্থ্যকর ফাস্ট ফুড বিক্রি করা হয়, যা বহিরাগতদের আকৃষ্ট করে।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুটপাতের উপরের ভিড় কখনও কখনও রাস্তার ওপর ছড়িয়ে পড়ে, যার কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। বিশেষত, রাজু ভাস্কর্য এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান গেইটের কাছে যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত রিকশাচালকদের ভিড়ের কারণে টিএসসি এলাকায় যানজট আরও তীব্র হয়ে ওঠে। মেট্রো স্টেশনটি কাছাকাছি থাকার কারণে এই সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। এর ফলে গত এক বছরে অন্তত এক ডজন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এসব দোকানে বিক্রি হওয়া খাবার শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে, বিশেষত যখন এসব খাবার অস্বাস্থ্যকর এবং জীবাণু সমৃদ্ধ। প্রক্টরিয়াল বডি, যা প্রক্টর এবং একাধিক সহকারী প্রক্টরের সমন্বয়ে গঠিত, এই সমস্যার টেকসই সমাধান করতে পারছেন না। দেখা যাচ্ছে, এক স্থান থেকে দোকান সরানোর পর তারা ক্যাম্পাসের অন্য স্থানে গিয়ে পুনরায় দোকান বসায়।
আরও পড়ুন: ঢাবি যেন বিনোদন কেন্দ্র, বহিরাগত ও গাড়ির চাপে ব্যাহত শিক্ষার পরিবেশ
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের এক সদস্য জানান, জনবল সংকট তাদের কার্যক্রমে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপদ ও উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখার অঙ্গীকারের প্রতি প্রশ্ন তুলছে।
এ বিষয়ে প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ভাসমান দোকান সরানোর কাজ করছি। তবে এক জায়গা থেকে সরানোর পর দোকানগুলো আবার অন্য স্থানে চলে যায়।’ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ঢাবির প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়েমা হক বিদিশা বলেন, ‘ভাসমান দোকানের কারণে অনেক সময় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়। এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি প্রাণকেন্দ্র, যেখানে নানা প্রকার মানুষের উপস্থিতি থাকে, এবং তাদের প্রয়োজনেই এসব দোকান গড়ে ওঠে। তবে, এসব সমস্যাকে মোকাবেলা করতে প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিম আরো কার্যকরভাবে ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি জানান।