সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া ও আইন অনুষদের ডিনের পদত্যাগের দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ  © সংগৃহীত

ছয় ঘণ্টার মধ্যে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া এবং আইন অনুষদের ডিনের পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল চারটার দিকে বিভাগটির সামনে থেকে বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা।

এসময় তারা জানান, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছিলেন তারা। তবে আইন অনুষদের ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু নাসের মোহাম্মদ ওয়াহিদ সাদিকুল ইসলাম সাগরের পক্ষ নিয়েছেন। তাই তারা সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ ডিনের পদত্যাগের দাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এসময় 'ধর্ষণকে সহায়তা করা ধর্ষণের সামিল',  'সেইভ আওয়ার ফিমেল স্টুডেন্টস', 'সেইভ মাই ফিমেল স্টুডেন্টস', 'নিপীড়ক বাইরে কেন? প্রশাসনের জবাব চাই', 'ধর্ষকের শাস্তি চাই' লেখা সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এসময় আইন বিভাগের আরেক শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলাম পিটার বলেন, ছাত্রদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার (সাদিকুল সাগর) বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিতে গিয়ে দেখি সে একটা নয় একাধিক ধর্ষণ করেছে। যদি সে আরেকটু সময় পেতো তাহলে তা ১০০ অতিক্রম করে যেত। এটা কি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়? যেখানে ১০০টা ধর্ষণ করার পরও ভিসি, প্রো-ভিসি তার বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নেয়নি। আমাদের অনুষদের ডিন বর্তমানে সিন্ডিকেট মেম্বার যিনি ডিপার্টমেন্টে বলেন, 'জিরো টলারেন্স'। কিন্তু এত অভিযোগের পরও তিনি সাদিকুল সাগরের বিষয়ে কেন নিরব? 

এ ব্যাপারে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, আইন বিভাগ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং যাছাই-বাছাই ও পরীক্ষা করে যৌন নিপীড়নের যে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে সেটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়েছে এবং এটিকে ভালোমতো তদন্ত করার জন্য যৌন নিপীড়ন সেলে পাঠিয়েছে। আইন বিভাগ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে পরীক্ষা, বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সেটা সিন্ডিকেটে গৃহীত হয়েছে।

এসময় তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর না থাকলেও দপ্তরগুলো ঠিকই ছিল। যৌন নিপীড়ন সেল থাকলেও সেখানে সদস্যরা নেই। আমি উপাচার্য স্যারকে আপনাদের বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি ফিরে এসে প্রথম কার্যদিবসের মধ্যেই যৌন নিপীড়ন সেল নতুন করে তৈরি করার কথা জানিয়েছেন। আমার মনে আমাদের অপেক্ষা করা উচিত যে আমাদের যৌন নিপিড়ন সেলের তদন্ত কমিটি গঠন হয় কিনা, এ বিষয়গুলো তদন্ত কমিটিতে যায় কিনা সে বিষয়গুলো পরবর্তীতে না হলে আপনারা যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমরা চাই ২৪ এর বিপ্লবের যে চেতনা সে চেতনা আমরা সবাই ধারণ করি। আমরা বৈষম্য যেমন চাই না, ঠিক তেমনি যৌন নিপীড়কও চাই না।

এ বিষয়ে অধ্যাপক আবু নাসের মোহাম্মদ ওয়াহিদ বলেন, আমি এখন একটি মিটিংয়ে আছি। আমি তাদের অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানি না।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট যৌন নিপীড়নের অভিযোগের দায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগরকে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।


সর্বশেষ সংবাদ