কোটায় ভর্তি না হয়েও হয়রানির শিকার, থানায় বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে সাওদা

সাওদা জামান রিশা
সাওদা জামান রিশা  © সংগৃহীত

২০১৭-১৮ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সাওদা জামান রিশা নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। তবে সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষায় মাত্র ৩২ নম্বর পেয়ে কোটার সুবিধা নিয়ে ভর্তির অভিযোগ উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এটিকে তিনি হয়রানি বলে দাবি করেছেন।

এমন হয়রানির প্রতিকার চেয়ে শুক্রবার (০৫ জুলাই) রাজশাহীর মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সাওদা। সামাজিক মাধ্যমে তাকে নিয়ে ‘হয়রানিমূলক’ প্রচারণায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে যারা যারা এমন প্রচারণায় জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানিয়েছেন তিনি।

জানা যায়, সাওদা জামান রিশা ২০১৭-২০১৮ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০৯তম পজিশন পেয়েছেন। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির চতুর্থ মেরিটে ভর্তি হন। বর্তমানে সাওদা বিশ্ববিদ্যালয়টির মাস্টার্সের একজন শিক্ষার্থী।

থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে সাওদা বলেন, আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমি ২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণ মেধায় ভর্তি হই। আমি থানায় হাজির হয়ে এই মর্মে অভিযোগ করছি, আজ শুক্রবার (০৫ জুলাই) আনুমানিক বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি গ্রুপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ভর্তি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।

অভিযোগে তিনি বলেন, আমি যেহেতু সাধারণ মেধায় ভর্তি হয়েছি, কিন্তু গ্রুপে আমার ব্যক্তিগত ছবি ব্যবহার করে এবং আমি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩২ পেয়ে চান্স পেয়েছি— এই ধরনের বিভ্রান্তি ছাড়ানো হচ্ছে। এই ধরনের অপপ্রচার চালানোর জন্য সামাজিকভাবে আমি এবং আমার পরিবার হেনস্তার শিকার হচ্ছে।

সাওদা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন উল্লেখ করে বলেন, আমি ও আমার পরিবার সামাজিক অনিরাপত্তায় আছি। তাই যে ব্যক্তি আমার ছবি ব্যবহার করেছে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে সাওদা জামান রিশা বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে করা মিথ্যাচার এবং স্যোশাল হ্যারাসমেন্টের প্রাথমিক প্রতিবাদ। আমি ৩২ পেয়েছি এবং কোটা ব্যবহার করেছি, এটা প্রথম পোস্টকারী ইউসুফ হোসেনসহ যারা পোস্ট করেছেন, ছড়িয়েছেন আপনাদের প্রমাণ করতে হবে। আর আমি কত পেয়েছি সেটার প্রমাণ আইনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেবে।

তিনি বলেন, আমার মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকা সত্ত্বেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি সেই সুবিধা না নিয়ে ভর্তি হই। কোটা নিলে প্রথম চয়েসের সাবজেক্ট পেতাম। এরপরও এখন কোটার বিপক্ষে থাকার জন্য আমার পাবলিক হ্যারাসমেন্ট যারা করছেন তাদের সেই দায় নিতে হবে।

মতিহার থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ রানা শুক্রবার রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এদিন সন্ধ্যায় সাওদার অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে তার অভিযোগ তদন্তে এখনো কোনো কর্মকর্তা নিয়োগ করা যায়নি। রাতের মধ্যে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ হলে আগামীকাল শনিবার থেকে এ অভিযোগে তদন্তে কার্যক্রম শুরু হবে। এসময় তিনি অভিযোগকারী সাওদাকে সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দেন।


সর্বশেষ সংবাদ