পেনশনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বৈষম্যমূলক: রাবি শিক্ষক সমিতি
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীদের পেনশন নিয়ে সম্প্রতি জারি করা প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাদর্শনের চেতনার পরিপন্থী বলে আখ্যায়িত করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষকরা। শুক্রবার (২২ মার্চ) রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা হিসেবে প্রচলিত সরকারি পেনশনব্যবস্থা নিয়ে গত ১৩ মার্চ যে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চরম হতাশ ও বিস্মিত হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে যেভাবে সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা ও এর অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে আগামী ১ জুলাই থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক।
একই বেতন স্কেলে আগে নিয়োগকৃতরা পেনশনের ক্ষেত্রে যেসব সুযোগ-সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা তা থেকে বঞ্চিত হবেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সময়ের পরে যোগদানকৃত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় অবসরকালীন সুবিধাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হবেন। এতে করে তাদের কর্মজীবনে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করবে।
সরকারের জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করার কোনো গভীর চক্রান্ত কি না—এমন প্রশ্ন রেখে রাবি শিক্ষক সমিতি বলছে, এ ধরনের বৈষম্য বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে শিক্ষাদর্শনের চেতনা থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্তশাসন দিয়েছিলেন এ প্রজ্ঞাপন সেই চেতনাকে অবজ্ঞা ও অবমাননা করার শামিল।
আরো পড়ুন: শেষ কর্মদিবসে ৩৭ নিয়োগ, নতুন বিতর্ক নিয়ে বিদায় চবি ভিসি শিরীণের
হঠাৎ করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার কর্মচারীদের মধ্যে এমন বৈষম্যমূলক নীতি প্রণয়নের প্রয়োজন কেন পড়ল, তা শিক্ষক সমিতির বোধগম্য নয়। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছেন তখন কি ভেতরের কোনো ষড়যন্ত্রী গোষ্ঠী সরকারকে সাংঘর্ষিক অবস্থায় ফেলতে চাইছে?
এমন প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবার পরে এটি সরকারের জনপ্রিয়তাকে নষ্ট করার কোনো গভীর চক্রান্ত কি-না, তাও জানতে চায় রাবি শিক্ষক সমিতি। এসআরও নম্বর-৪৭-আইন/২০২৪ স্মারকে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতিতে সরকারের সব স্তরের কর্মচারীদের মধ্যে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানানো হয়।