ঢাবি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি

যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

অধ্যাপক নাদির জুনাইদ
অধ্যাপক নাদির জুনাইদ  © ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে করা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে তথ্যানুসন্ধান (ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং) কমিটি  করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম সিন্ডিকেট। 

রবিবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা থেকে চলা সিন্ডিকেট সভা শেষে এক সিন্ডিকেট সদস্য এ তথ্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই সিন্ডিকেট সদস্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যৌন হয়রানির প্রকৃত সত্যতা যাচাই করতে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক সীমা জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মাসুদুর রহমান এবং সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহ।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি নম্বর কম দেওয়া নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ১২তম ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের পর ১০ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রক্টরের কাছে লিখিত দেন বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী। যদিও তিনি (নাদির জুনাইদ) এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য দেখছেন বলে দাবি করেন।

অপরদিকে, অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির এই অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবিতে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। তার বিভাগীয় অফিস কক্ষে তালা দেওয়ার পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষের তালায় সিলগালা করে দেন শিক্ষার্থীরা এবং দরজায় ‘যৌন নিপীড়ক অধ্যাপক নাদির জুনাইদ ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত’ সংবলিত পোস্টার ঝুলিয়ে দেন। এ ছাড়া, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দেন।

পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে অধ্যাপক নাদির জুনাইদকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ছুটির চিঠিতে বলা হয়, অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে এবং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের জন্য তাদের একাডেমিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে না এমন লিখিত নিরাপত্তার আশ্বাস চাইলে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিভাগের একাডেমিক কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে এমন একটি বিবৃতি প্রদান করেন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমাদ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেন এবং ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হলে আবারও ক্লাস বর্জন করে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সর্বশেষ, ২৮ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রীর  যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির অভিযোগ জানান। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী।


সর্বশেষ সংবাদ