বসন্ত বরণে সেজেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

  © টিডিসি ফটো

প্রকৃতি খুলে দিয়েছে দক্ষিণ দুয়ার। সে দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। ফাগুনের হাত ধরেই ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতেই প্রকৃতির আজ এত বর্ণিল সাজ। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। প্রতিবারের মতো এবারও ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে নতুন সাজে সেজেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা বিদ্যাপীঠ জাহাঙ্গীরগর বিশ্ববিদ্যালয়। 

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন মহুয়া তলায় বাংলা বিভাগের আয়োজনে মহাসমারোহ ও বহু-বর্ণিল সাজে শুরু হয় বসন্তের বরণ পর্ব।

এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত অংশগ্রহণে গান, নাচ ও আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। এরপর বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে র‌্যালি বের করেন। অন্যদিকে ‘মাধবীবিতানে বায়ু গন্ধে বিভোল’ স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম ছায়া মঞ্চে নবীনবরণ ও বসন্ত যাপন আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট।

সরেজমিনে দেখা যায়, বসন্তের এ দিনে তরুণীরা হলুদ আর বাসন্তী রঙের শাড়ি ও তরুণরা হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পরে শামিল হয়েছে বসন্ত বরণ উৎসবে। বসন্তের এ সাজে রঙিন ছিল শিশুরাও। 

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ধীরাজ রায় বলেন ‘বসন্ত আমাদেরকে উল্লসিত ও উৎফুল্ল করে। বসন্তের মধ্যদিয়ে আমরা যেন জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করি। আপনারা সবাই জানেন ফুল ফোঁটে বনে-বাগানে তার শিহরন লাগে আমাদের মনে। বসন্ত এমনই এক সুন্দর ও সৌন্দর্যমণ্ডিত ঋতু।’

বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আনিকা ইনতিসার বলেন, ‘বসন্ত মানেই নতুন কিছু। বসন্ত মানেই পুরনোকে ঝেড়ে ফেলা। বসন্ত নিয়ে এমন আয়োজন অব্যাহত থাকুক। সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা।'

আয়োজন উদ্বোধনকালে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের কাছে বাসন্তী আমেজ খুবই সমাদৃত। বসন্ত আমাদের জীবন রাঙিয়ে দিয়ে যায়। বসন্তের চমৎকার আবহাওয়া ও প্রকৃতির নব সাজ আমাদেরকে উল্লসিত ও উৎফুল্ল করে। বসন্তের মধ্যদিয়ে আমরা যেনো জীবনকে নতুনভাবে উপলব্ধি করি এই প্রত্যাশা করি।

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম তালুকদার বলেন, ‘শীতের রিক্ততার পরে বসন্তের মাধ্যমে প্রকৃতিতে যেমন আনন্দের জোয়ার লাগে ঠিক তেমনি বসন্তের মাধ্যমে আমাদের মনের আনন্দ দৃশ্যমান হয়। এই আনন্দ, উৎসবমুখর পরিবেশ সারাবছর ধরে বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই আমাদের এ আয়োজন।’

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহসান ইমাম বলেন, বসন্ত মানেই নতুন কিছু, বসন্ত এলে প্রকৃতি যেভাবে তার জড়া জীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে নতুন উদ্যমে নতুন রূপ ধারণ করে। আমরাও সেভাবে নতুন কঁড়ি প্রস্ফুটিত হবার মতো নতুন উদ্যমে জেগে উঠি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, বিদ্যায়তনগুলোতে প্রকৃতিকে ধারণের এমন চর্চা অব্যাহত থাকুক। আমি আমার সন্তানকে নিয়ে এ উৎসব উদযাপনে এসেছি, খুবই ভালো লাগছে।’


সর্বশেষ সংবাদ