অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যান ছাত্রী, ছাত্রলীগ সভাপতি হওয়ায় বিচার হচ্ছে না জাবি শিক্ষক জনির
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৭ AM , আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৫৭ PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) একটি আবাসিক হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় সারা দেশে। সে ঘটনায় অভিযুক্তদের বহিষ্কার করে প্রশাসন। কিন্তু এর আগে ছাত্রীকে জোর করে গর্ভপাত করানো জাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিচার করছে না প্রশাসন। বিচার না করার কারণ হিসেবে জাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হওয়া এবং উপাচার্য নিজেই তার সহায়তায় পদ পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাহমুদুর রহমান জনি পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৬ ব্যাচের ছাত্র। ২০১২ সালে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হন। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। বর্তমানে পদোন্নতি পেয়ে তিনি সহকারী অধ্যাপক। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে ‘অনৈতিক’ সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ ওঠে।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর মাহমুদুর রহমান জনি ও একই বিভাগে নিয়োগ পাওয়া প্রভাষক আনিকা বুশরা বৈচির একটি অন্তরঙ্গ ছবি (সেলফি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়। যেখানে বলা হয়, এভাবেই ললিপপের ভেল্কিতে শিক্ষিকা হলেন আনিকা বুশরা বৈচি।
একই সঙ্গে বিভাগের শিক্ষক পদে আবেদনকারী ৪৩ ব্যাচের এক ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ কথাবার্তার অডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে মাহমুদুর রহমান জনি ভুক্তভোগী ছাত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়লে জোরপূর্বক গর্ভপাত করান। এছাড়া, জনির সঙ্গে ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রীর ‘অনৈতিক’ সম্পর্ক স্থাপন এবং ‘অশালীন’ চ্যাটিংয়ের ছবি ও তথ্য সামনে আসে।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিসা পারভীন জলির মতে, এমন হলে পরবর্তীতে যৌন হয়রানি বা প্রতারণার মতো এমন ঘটনা আরও বাড়তে থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরা শিক্ষক সমাজের জন্য তা লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, ‘জনির মত একজন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের মত পবিত্র জায়গায় বিচরণ করলে শিক্ষক সমাজের মাথা নুয়ে পড়ার মতো অবস্থা হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, দোষ প্রমাণিত হওয়ার পরও জনির বিচারে সব নিয়ম ভঙ্গ করেছে প্রশাসন। তিনি বীরদর্পে প্রশাসনের প্রভাবশালী শিক্ষকদের সাথে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ান। এতেই বুঝা যায়, কারা ক্যাম্পাসকে ধর্ষক, সন্ত্রাসী, খুনিদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন।’
রোববার সন্ধ্যায় জাবি সিন্ডিকেট সভা শেষ সাংবাদিকরা মাহমুদুর রহমান জনির বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বিষয়টি এড়িয়ে যান।