শেষের পথে ঢাবির শতবর্ষ মনুমেন্টের কাজ

ঢাবির শতবর্ষ মনুমেন্টের কাজ শেষ ৯৯ শতাংশ
ঢাবির শতবর্ষ মনুমেন্টের কাজ শেষ ৯৯ শতাংশ  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মল চত্বর এলাকা ঘিরে তৈরি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষী মনুমেন্ট। ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করা হয়। ইতিমধ্যে এর ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শুরুর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই আশঙ্কায় প্রকল্পটি বার বার সমালোচিত হলেও উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর ভিন্নমত পোষণ করছেন শিক্ষার্থীরা। উদ্বোধনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তারা এই প্রকল্পের সমালোচনা করলেও তারাই এখন করছেন প্রশংসা। তবে নতুন উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এ প্রকল্পের পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনায় স্থাপনাটি আরও সুন্দর হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষের একাংশ।

এ বিষয়ে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল শেখ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এই স্থাপনাটির কাজ যখন চলছিল তখন আমি এর সমালোচনা করে ডেইলি ক্যাম্পাসকেই একটি বক্তব্য দিয়েছিলাম কিন্তু যখন এটি উন্মুক্ত করা হলো দেখার পর আমার নিজের কাছেও ভালো লাগছে। এটি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া আমরা যে মল চত্বরের সবুজায়ন নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম সেখানে মাটি আলগা করে আবারও ঘাস লাগানো হয়েছে। আমার ধারণা এখন মল চত্বর আগের থেকে আরও বেশি সুন্দর হবে।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব বলেন, মল চত্বর এবং আমাদের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পাশের যে জায়গাগুলোতে সবুজায়ন নিয়ে আমরা শঙ্কায় ছিলাম সেটা এখন নেই। এখানে বসার জন্য বেঞ্চগুলো করে দেওয়াতে আরও সুবিধা হয়েছে। 

তবে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন এই স্থাপনাটির কারণে বহিরাগতদের আনাগোনা বাড়তে পারে। ফলে সৃষ্টি হতে পারে নানা অপকর্ম। ঢাবি শিক্ষার্থী মাহিন জানান, স্থাপনাটি দৃষ্টি নন্দন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বহিরাগতদের সবসময়ই একটা আকর্ষণ কাজ করে। এমন ঘটনাও ঘটে যে বহিরাগত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে নানা অশালীন কর্মকাণ্ড করে। এই স্থাপনার ফলে ক্যাম্পাসে বহিরাগত বাড়বে এটি নিশ্চিত তবে সেটি প্রতিরোধের জন্য প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কি না বা কোনো পরিকল্পনা আছে কি না সে বিষয়ে আমি এখনও জানি না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে কোনো বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পুরো মনুমেন্ট এবং স্থাপনাটি সিসি টিভির আওতাধীন করা হয়েছে এবং প্রতিটি কোনায় কোনায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে যাতে করে যেকোনো অপকর্ম সহজেই দৃশ্যমান হয়। এটা মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের প্রথম নির্দেশনা। 

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয়ত আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে কথা বলে আমাদের বর্তমান মোবাইল টিম একটি থেকে বাড়িয়ে দুইটি মোবাইল টিম গঠন করা যাতে করে একটি টিম উত্তর সাইডগুলো কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রাখতে পারে এবং যেকোনো সমস্যায় তারা সবার আগে যেতে পারে এবং অন্য টিম থাকবে দক্ষিণে।

এদিকে গত ডিসেম্বর মাসে মনুমেন্টের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ না করায় কাজ শেষ হয়নি বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. আকরাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রকল্পটির ৯৯ শতাংশ কাজই ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র ল্যান্ডস্কেপটা বাঁকি আছে। ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সরকারের নির্বাচনকালীন জটিলতার কারণে বাজেট বরাদ্দ হয়নি ফলে ঠিকাদারদের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। বাজেট হয়ে গেলেই দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান প্রায় ২১ কোটি টাকা বাজেটের এই প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে তার মেয়াদ শেষ হলে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়ে এই প্রকল্পটির হাল ধরেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল।


সর্বশেষ সংবাদ