ঢাবির কুয়েত মৈত্রী হল বাইরে ফিটফাট ভেতরে সদরঘাট
- মুহাইমিনুল ইসলাম, ঢাবি
- প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৭ PM , আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ হলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল অন্যতম। নানা অব্যবস্থাপনা ও হল প্রশাসনের অবহেলায় জর্জরিত হলটি। ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের শিকদার মনোয়ারা ভবনে রাখা হচ্ছে ছাত্রীদের। হলটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পাশাপাশি রয়েছে সিট সংকটও। এদিকে, হলের এমন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেও অস্বীকার করেছে হল প্রশাসন।
ছাত্রীরা জানান, তারা প্রায় ২৫০ জন ছাত্রী এই ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের অভাব, ক্যান্টিনের নিম্নমানের খাবার নিয়েও সমস্যা রয়েছে। মনোয়ারা ভবনটি বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই হলটি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু ভবনের ভেতরের দৃশ্য সম্পূর্ণ বিপরীত। হলটির অবস্থা বহুল প্রচলিত প্রবচন ‘বাইরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাটে’র মতো।
২০০৬ সালে কুয়েত মৈত্রী হলের সিকদার মনোয়ারা ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে হলের প্রকৌশল শাখা। তিন তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে মাত্র ২টি ওয়াশরুম রয়েছে। হলের সার্বিক সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের কাছে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ ছাত্রীদের।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে কুবির তিন হলে ফাটল, শিক্ষার্থীদের ছোটাছুটি-আতঙ্ক
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়েত মৈত্রী হলের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী জানান, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। এটা হল প্রশাসন জানার পরও প্রায় ২৫০ মেয়েকে এই ভবনে রেখেছে। নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে ভবনটিতে। টয়লেট সমস্যা, রুমগুলো জরাজীর্ণ, আলোবাতাস কম, গোসলখানা মাত্র ২টা।
তিনি বলেন, এই ভবনটি এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, জোরে বাতাস হলে ভবনটি কাঁপতে থাকে। কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পে ভবনটি এতো জোরে কেঁপেছে যে কয়েকজন মেয়ে সেন্সলেস হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ছাত্রী বলেন, পলিটিক্যাল নেত্রীদের কাছে হল প্রশাসন জিম্মি। তারা পলিটিক্যাল নেত্রীদের কথা মত হলের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। আর্থিক সংকটের কারণে মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে এই হলে বসবাস করছি। নতুন ভবন নির্মাণ না করে ঝূকিপূর্ণ ভবন সংস্কার করছে হল প্রশাসন।
বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহার ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কুয়েত মৈত্রী হলের মনোয়ারা ভবনে ১০৬ জন মেয়ে থাকে। এই হলটি সত্যিকারের ঝুঁকিপূর্ণ কিনা এটা নিয়ে উপাচার্য স্যার যাচাইবাচাই, বিচার বিশ্লেষণ করছেন। তবে এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায়নি।
অধ্যাপক নাজমুন নাহার পরে তার ‘ঝুঁকিপূর্ণ নয়’ বক্তব্য পাল্টে দিয়ে বলেন, এক সময় এ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে সকল ছাত্রীকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেয়েরা তালা ভেঙে থাকা শুরু করেছে। ওয়াশরুমের অব্যবস্থাপনার নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাকে বলে লাভ নেই, ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি বা যারা তৈরি করেছেন তারা জানেন।