রাবির ছাত্রের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার, জানতে চায় প্রকৃত কারণ
- সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১৫ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:২৯ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চায় তারা। তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামে। তিনি চাপাদহ এতিমখানা দ্বিমুখী দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট আমিনুল ইসলামের ছেলে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন ফুয়াদ। তিনি থাকতেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর সিঙ্গেল কক্ষে। তার মাস্টার্সের পরীক্ষা চলছে।
গত শনিবার বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পর গতকাল রবিবার বিকেলে হল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে সহপাঠিরা। ফুয়াদ আল খতিবের এমন আকস্মিক মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ মা-বাবাসহ পুরো পরিবার। তারা ফুয়াদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চান।
ফুয়াদের চাচা গাইবান্ধা শহরের আদর্শ দ্বি-মুখী আলিম মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট রুহুল আমিন বলেন, এরকম একটি আকস্মিক মৃত্যুরে খবরে আমরা হতবিহ্বল অবস্থার মধ্যে আছি। গত শনিবার ছেলেটা বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। এরপর আমরা ওর মৃত্যুর খবর পাই।
তিনি আরও জানান, ফুয়াদ শুক্রবার অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা দেয়ার জন্য বাড়িতে এসেছিলেন। পরীক্ষা দিয়ে পরদিন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
ধোপাডাঙ্গা গ্রামে ফুয়াদের এক বন্ধুর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিংয়ের বরাত দিয়ে রুহুল আমিন বলেন, ফুয়াদ ওর বন্ধুকে শনিবার রাত ১২টার দিকে ম্যাসেজের মাধ্যমে জানায় যে ওর প্রাইমারির নিয়োগ পরীক্ষা ভাল হয়েছে। ওই ম্যাসেজ আমি দেখেছি। ফুয়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে চ্যাটিং করছিল।
এক প্রশ্নের জবাবে তার চাচা রুহুল আমিন বলেন, ফুয়াদ অত্যন্ত নরম ও শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। বাড়িতে আসার পর ওর মাঝে কোনো অস্বাভাবিকতা আমরা দেখিনি। আত্মহত্যা করতে পারে- এমন ঘটনা আছে বলে আমাদের মনে হয় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুনেছি ওর (ফুয়াদ) মুখ দিয়ে নাকি লালা-রক্ত পড়েছে। শরীর কালো হয়ে গিয়েছিল। বিষয়টি আমরা বুঝতে পারছি না। শুনেছি তদন্ত হচ্ছে। আমরা ওর মৃত্যুর প্রকৃত কারণটা জানতে চাই।
জানা গেছে, শনিবার বাড়ি থেকে ফিরে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে মশারি টানিয়ে সিঙ্গেল রুমে ঘুমিয়ে পড়েন ফুয়াদ। আগের দিন জার্নি করে ফেরায় সকালে তার রুমে তাকে কেউ ডাকতে যায়নি। রবিবার দুপুর পর্যন্ত ঘুম থেকে না উঠলে পাশের কক্ষের এক বন্ধু ডাকাডাকি করেন। সাড়া না পেয়ে তিনি ফুয়াদের শরীর ধরে নাড়া দেন। এ সময় তিনি দেখতে পান যে ফুয়াদের মুখ দিয়ে লালা পড়ছে এবং পুরো শরীর কালো হয়ে গেছে। পরে কয়েক বন্ধু মিলে বিকেল ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় ফুয়াদকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান যে ফুয়াদ কয়েক ঘণ্টা আগেই মারা গেছেন।