০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:২৬

সেলফি পরিবহনের ২০ বাস আটক জাবি শিক্ষার্থীদের, রুট পারমিট বাতিলের দাবি

আটকৃত বাস  © টিডিসি ফটো

ঢাকার ধামরাইয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ৪১তম বিসিএস ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত রুবেল পারভেজ বাস চাপায় নিহত হওয়ার ঘটনায় সেলফী পরিবহনের ২০টি বাস আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (০৭ ডিসেম্বর) সকাল নয়টায় ধামরাই থানা স্ট্যান্ড সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সেলফি পরিবহনের বাস আটকানো শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

নিহত রুবেল পারভেজের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানায়। তিনি পরিবারের সঙ্গে ধামরাইয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। রুবেল পারভেজ মানিকগঞ্জের ঝিটকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এমটিও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া সম্প্রতি তিনি ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

জানা যায়, সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থানা স্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা তিন পথচারীকে চাপা দেয় সেলফি পরিবহনের একটি বাস। এতে রুবেল পারভেজসহ দু’জন নিহত হন। খরবটি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাস আটকানো শুরু করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে সেলফি পরিবহনের বাস। এই পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণহীন মহাসড়কে চলাচল করে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে তাজা প্রাণ। আমরা এই মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে চাই। পরিবহন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত সেলফি পরিবহনের বাস সড়কে চলাচল করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া তাদের রুট পারমিট বাতিল করতে হবে।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের বাধায় ফজিলাতুন্নেছা বিশ্ববিদ্যালয়ে দরপত্র জমা দিতে পারেনি ঠিকাদাররা

আটক সেলফি পরিবহনের একটি বাসের চালক নুরুল হক বলেন, ‘সকালে একটি বাস দুর্ঘটনায় দু’জন নিহত হয়েছেন। বাস আটকানোর পর আমরা বিষয়টি শুনেছি। দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে সেলফি পরিবহনের অন্য বাস। তবে এখন যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে সব বাসই আটকাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।’

এ বিষয়ে রুবেল পারভেজের সহপাঠী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এসএসসি পাসের পরপরই রুবেল পারভেজের বাবা মারা যায়। কলেজ জীবন থেকেই ধামরাইয়ে ভাড়া বাসায় থাকত। ধামরাই সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে। অনেক সংগ্রাম করেছে সে। এখন বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও নিজের পরিবারের জন্য কিছু করতে পারলো না। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. রনি হোসাইন বলেন, ‘রুবেল পারভেজের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। শিক্ষার্থীরা মালিকপক্ষের কাছে নিহত রুবেল পারভেজের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ও সেলফি পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা হাইওয়ে থানা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু হাসান বলেন, ‘নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেলফি পরিবহনের বাসটি রেখে চালক ও সহকারীরা পালিয়ে গেছে। নিহতদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’