২৭ জুলাই ২০২৩, ২০:২২

পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে হলে এনে পেটাল ঢাবি শিক্ষার্থীরা

আহত ব্যবসায়ী  © টিডিসি ফটো

পাওনা টাকা চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শাহ নেওয়াজ ছাত্রাবাসের (বর্ধিতাংশ) কয়েকজন শিক্ষার্থী এক রেস্তোরাঁ মালিককে পিটিয়ে আহত এবং তার দোকান ভাঙচুর করেছেন। আহত রেস্তোরাঁ মালিকের নাম নেয়ামতউল্লাহ। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার আইয়ুব কলোনিতে 'রাইস কিং' নামে রেস্তোরাঁ চালান তিনি।

বুধবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে। রেস্তোরাঁ মালিকের এক আত্মীয়  ৯৯৯-এ ফোন দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল টিমের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

ভুক্তভোগী নেয়ামতউল্লাহ বলেন, শাহনেওয়াজ হলের কিছু ছাত্ররা বাকি খেয়ে চলে যায়। টাকা চাইলে বিকাশ থেকে তুলে দিবে বলে আর দেয় না। আজ এক ছাত্র আমার হোটেলে খাওয়ার পর বিকাশ থেকে টাকা তুলে এনে দিবে বললে, আমি বলি, আমাকে সেন্ড মানি করেন। বিল হিসেবে ৯০ টাকা সেন্ড মানি করে চলে সে যায়। কিছুক্ষণ পর ছাত্ররা এসে আমাকে হলের ভেতর নিয়ে যায়। এর আগে দোকানের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। 

তিনি বলেন, আমাকে হলে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে মারধর করে। পরে একটি রুমে নিয়ে ২৫/৩০ জন মিলে কিলঘুষি মারে। আমি তিনবার অজ্ঞান হয়ে যাই। তখন পানি চাওয়ায় তারা আমার মুখে প্রস্রাবও করে।

আরো পড়ুন: দুই মাস এগিয়ে আসতে পারে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা

তিনি আরও বলেন, এর আগে তারা পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছিল। তখন না দেওয়ায় আমার উপর এই অত্যাচার। তারা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী দাবি করেন তার ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মারধরকারীদের চিহ্নিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, হলের তিনজন ছিল আর বাকি তিন জন বাইরে ছিল। হলের তিন শিক্ষার্থী হলো- রাহাত, তৌহিদ ও ইমরান। আর হলের বাইরের তিনজন হলো- মিন্টু, ওদুদ ও ওদুদের ভাইগ্না শাকিল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যায় রেস্তোঁরায় বাকি খেতে যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম তাওহিদুল ইসলাম। সে গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ শাহ নেওয়াজ ছাত্রাবাসের ওয়ার্ডেন আব্দুস সাত্তার  বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে বলে জানতে পেরেছি, সে প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিল বলে পরিচয় দেয়। শিক্ষার্থীরাও এটা নিয়ে বিরক্ত। আজকে নাকি তাওহিদুল নামে শিক্ষার্থীর কলার ধরে শার্ট ছিঁড়ে ফেলছে। পরে সে ছাত্রাবাস নিয়ে লোকজন নিয়ে মারধর করে। শিক্ষার্থীরা যে কাজটি করেছে মোটেও ভালো করেনি।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রভোস্ট স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী যদি অভিযোগ দিলে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি নিয়ে আগাব। আমরাও চাচ্ছি তিনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক।

এবিষয়ে স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কে এম সাইফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।