রুম দখল নিয়ে ঢাবির হলে ছাত্রলীগের ‍তুলকালাম, রক্তাক্ত অনেকে

ঢাবির হলে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত একজন
ঢাবির হলে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত একজন  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলে কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। মারামারিতে দু’পক্ষের অন্তত ১০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হলের ২০৪ নম্বর রুমকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১১টা থেকে রুম দখল নিয়ে মহড়া দিচ্ছিল হলের শয়নের অনুসারীরা। ১২টার পরে ২০৪ নম্বর রুমে শয়নের অনুসারীরা এসে আবাসিক শিক্ষার্থী মোস্তফা ইকবার হৃদয় ও জাহিদ হাসানের (সৈকতের অনুসারী) জিনিসপত্র রুম থেকে ফেলে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলে।

পরে দীর্ঘক্ষণ উত্তেজনা চলে এ নিয়ে। রাত সোয়া ১টার দিকে সৈকতের অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে গিয়ে তাদের রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এ সময় হলের অন্যদিক থেকে শয়নের গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীরা লাঠি, স্টাম্প ইত্যাদি দিয়ে আক্রমণ করে। এতে দু’পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে দু’জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। 

সূর্যসেন হলে শয়নের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন, মনির হোসেন, তুষার হোসেন, ওমর ফারুক। অন্যদিকে সৈকতের গ্রুপের নেতৃত্ব দেন আব্দুল্লাহ খান শৈশব ও যুবরাজ। আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে যাওয়া দু’জন হলেন- জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের মো. সুজন (শয়ন গ্রুপ) ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের জাবের বিন আমিন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ করেই সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন সমর্থিত গ্রুপের ওমর ফারুক, রাকিব মুন্সি, মিনহাজ ইমনের নেতৃত্বে হলের ৩২০,২০৪ ও অন্য আরেকটি কক্ষে আগে থেকে অবস্থান করা সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারীদের বের করে দেয়। পরে জুনিয়রদের থাকতে বলা হয়।

রাত ১টার পর সৈকত গ্রুপের আরিফুর রহমান যুবরাজ, আব্দুল্লাহ খান শৈশব ও ফয়সালের নেতৃত্বে বিষয়টি মিমাংসা করতে গেলে অন্য গ্রুপ হামলা করে। এ সময় তারা রুমগুলোতে তালা মেরে ধাওয়া করে হল থেকে বের করে দেয়। এ সময় স্টাম্পের আঘাতে একজনের মাথা ফেটে যাওয়াসহ কয়েকজন আহত হন। 

পরে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা সূর্যসেন হলে এসে উপস্থিত হন। আরও ঝামেলা হতে পারে এমন শঙ্কায় দুই নেতার উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে সবাইকে রুমে যেতে বলা হয়।

সূর্যসেন হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি তখন হলে ছিলাম না। হাউজ টিউটরদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের কক্ষে ফিরেছে। হলের সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলে গিয়ে হাউস টিউটরদের সঙ্গে কথা বলে ও ঘটনায় যারা পক্ষে-বিপক্ষে ছিল তাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ