দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: গলায় শিকল বেঁধে প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: গলায় শিকল বেঁধে প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি: গলায় শিকল বেঁধে প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের  © টিডিসি ফটো

সারাদেশের চলমান দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছয় শিক্ষার্থী। ‘ব্যবসায়ীক সিন্ডিকেটের শেঁকল বন্দী জনতন্ত্র’ প্রতিপাদ্যে মুখে টেপ সাঁটিয়ে ও গলায় শিকল বেঁধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী মূকাভিনয় প্রদর্শনী করে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।

প্রদর্শনীতে দেখানো হয়, দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাতে শেকল বন্দী প্রশাসন, হলুদ গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদসহ দেশের সাধারণ জনগণ। হাতে হাজার টাকার টাকার নোট দেখিয়ে লেলিয়ে রাখছে এইসব স্বায়ত্তশাসিত ব্যক্তি ও  প্রতিষ্ঠানকে। টাকার লোভে দেখিয়ে বন্ধ রাখছে দেশের বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদ সহ সব হলুদ মিডিয়াকে। তারা যা বলছে তাই সত্য এবং তাই করণীয় হিসেবে ধরে শিকলে বন্দি থাকতেই তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে।

অপরদিকে দেখা যায়, একজন তারুণ্যের প্রতীক হয়ে লড়ে যাচ্ছে দেশের চলমান সব অনিয়ম, দুর্নীতি সহ সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে। প্রতিবাদী তারুণ্য হাত তুলে গর্জে উঠে উচ্চারণ করছে, দেশের এই ক্রান্তি-লগ্নে দেশকে উদ্ধার করবে কে? দেশের এই দুঃসময়ে দেশকে উদ্ধার করবে কে? দেশের পরাধীন গণমাধ্যম কে উদ্ধার করবে কে? দেশের এই স্বৈরাচারের পতন ঘটাবে কে? দেশের এই দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করবে কে? 

প্রদর্শনীতে মূল ছয়টি চরিত্রে এই অভিনয় সম্পাদিত হয়। ছয়টি চরিত্রের ‘দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী’ চরিত্রে অভিনয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। ‘তরুণ সমাজে’র প্রতিনিধিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এম এ সায়েদ। অন্যান্য চরিত্র গুলা হলো প্রশাসন, হলুদ গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী রাজনীতিবিদ এবং জনসাধারণ।

এ নিয়ে পথনাটক ও মূকাভিনয়ের উৎসাহদাতা মহিউদ্দিন রনি বলেন, ঐ দুর্নীতিবাজ লুটপাটের বিরুদ্ধে বলতে বলতে আজ আমরা ক্লান্ত, আমাদের শক্তি লোপ পাচ্ছে। কিছুদিন পর আমরা রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করার ফলে আমাদের মেরুদণ্ডও ভেঙে ফেলা হবে। এজন্যই আমাদের দল মত নির্বিশেষে কথা বলতে হবে আওয়াজ তুলতে হবে যার নেতৃত্ব দিবে এই তরুণ সমাজ। বাংলাদেশের সবকিছুর দাম বাড়ে কিন্তু আপনার বা আমাদের বাবার বেতন কি বেড়েছে? মজুদদাররা, আড়তের মালিকরা আজকে যে-ই কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রেখেছে, এই সিন্ডিকেট যদি ভেঙে ফেলা না হয় তাহলে আগামীকাল আমাকে আপনাকে পুনরায় ভুগতে হবে। 

রনি বলেন, আজকে কেউ সত্য বলতে গেলেই তার গলা টিপে ধরা হচ্ছে, যেমনটা দেখতে পাচ্ছি প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের ক্ষেত্রে। আমাদেরও মৃত্যুর ভয় আছে, আমাদেরও গুম হবার ভয় আছে। আজ আপনারা আমার পাশে আসছেন না, গুটিকয়েক শিক্ষার্থীকে নিয়ে আমি আন্দোলন করে যাচ্ছি। একসময় আমাকে মেরে ফেলা হলে তরুণ সমাজ বলবে রনি কথা বলেছিল, কেউ তার সাথে দাঁড়ায়নি, সে আজ মৃত। এ দেশের জন্য কিছু করে লাভ নেই, এ দেশকে ভালোবেসে লাভ নেই। তারা তখন হয় দেশ ছেড়ে পালাবে নাহলে টিকে থাকতে নিজেরা বড় দুর্নীতিবাজ, লুটেরার দলে যোগ দিবে। তাই আমরা সবাই যদি একসাথে মিলে আওয়াজ তুলতে পারি তাহলে এই সিন্ডিকেট ভাঙবে বলে আমি বিশ্বাস করি।


সর্বশেষ সংবাদ