প্রলয় গ্যাংয়ের নির্যাতনে ছিঁড়ে গেছে ঢাবি ছাত্রের পায়ের লিগামেন্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধরের ঘটনায় ‘প্রলয় গ্যাংয়ের’ বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রের মা সাদিয়া আফরোজ খান। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা জোবায়েরকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্টাম্প, রড দিয়ে তাকে পিটিয়েছে। এতে তার মাথা ও চোখে গুরুতর জখম হয়। ছিঁড়ে যায় ডান পায়ের লিগামেন্ট। রবিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ১৯ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দেন তিনি।
অভিযোগে সাদিয়া আফরোজ খান জানান, গতকাল সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে তার ছেলে জোবায়েরসহ তার ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরা ইফতার করছিলেন। হঠাৎ একটি প্রাইভেটকার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের গায়ে কাঁদা ছেটায়। সেসময় গাড়ির ভেতর উচ্চস্বরে গান বাজছিল এবং ডাক দেওয়ার পরও গাড়িটি থামেনি। পরে জোবায়ের তার ৪ বন্ধুকে নিয়ে কার্জন হলের দিকে যাওয়ার সময় ৩ নেতার মাজারের সামনে ওই গাড়িটি দেখে চিনতে পারে এবং জিজ্ঞেস করে যে, এভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল কেন।
‘‘সেসময় গাড়ি থেকে ৫ জন নামলে জোবায়ের ও তার বন্ধুরা দেখে যে, তারা ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী। সেসময় জোবায়ের ও তার বন্ধুদের সঙ্গে ওই ৫ জনের কাটাকাটি হয়। পরে জোবায়ের জসিমউদ্দিন হলের সামনে চলে এলে অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে সাহিল নামের একজন কল দিয়ে তার অবস্থান জানতে চায়। জোবায়ের তার অবস্থান জানালে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্তরা তাকে স্ট্যাম্প, লোহার রড, চামড়ার বেল্ট ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে।’’
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রকে মারধর, প্রলয় গ্যাংয়ের ১৯ সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
উল্লেখিত অভিযুক্তরা হলেন- শাস্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের তবারক মিয়া, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগের ফয়সাল আহম্মেদ সাকিব ও ফারহান লাবিব, দর্শন বিভাগের অর্ণব খান, মার্কেটিং বিভাগের মো. শোভন, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের নাঈমুর রহমান দুর্জয়, রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সাদ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের সিফরাত সাহিল, সমাজকল্যাণ বিভাগের হেদায়েত নূর, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাহিন মনোয়ার।
তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাদমান তাওহিদ বর্ষণ, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ সাইদ, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের আবু রায়হান, লোক প্রশাসন বিভাগের প্রত্যয় সাহা, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আব্দুল্লাহ আল আরিফ, কবি জসিম উদ্দিন হলের রহমান জিয়া, চাইনিজ ল্যাংগুয়েজ বিভাগের ফেরদৌস আলম ইমন, ফ্যাইন্যান্স বিভাগের মোশারফ হোসেন এবং জগন্নাথ হলের জয় বিশ্বাস।
এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হলের সামনে ওই ছাত্রকে পেটান তার একদল সহপাঠী। তারা ‘প্রলয়’ নামে ক্যাম্পাসভিত্তিক একটি গ্যাংয়ের সদস্য। মারধরের ঘটনায় মায়ের করা অভিযোগ পুলিশ গ্রহণ করেছে। এটি এখন আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।