কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার চালু নিয়ে যা জানাল রাবি প্রশাসন
জনবল সংকটে প্রায় তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার রাতের খাবার। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ খাবারের দোকানগুলোও উচ্ছেদ করে দিয়েছে প্রশাসন। ফলে রাতের খাবার নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে ক্যাফেটেরিয়ায় পুনরায় রাতের খাবার চালু করার চিন্তা ভাবনা করেছে প্রশাসন।
বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক এ.কে.এম. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে আমি কথা বলবো। আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটা মেনে তারা যদি আমাকে সাহায্য করে তাহলে রমজানের পরেই রাতের খাবার চালু করাতে আর কোনো বাঁধা থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমরা কর্মচারী সংকট আছি। তাই শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দরকার। বেসিনের পাশে আমরা বড় একটা পাত্র রাখবো। খাবার শেষে শিক্ষার্থীরা তার নিজের প্লেটটি ওই পাত্রের ভিতরে রাখবে। সামান্য এই সহযোগিতা করলেই রাতের খাবার পরিবেশন করতে পারবো।
আরো পড়ুন: পিতার স্বপ্ন পূরণে কাজ করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা: শিক্ষামন্ত্রী
এদিকে, কোনো না কোনো কাজে অনেক শিক্ষার্থীকেই প্রতিদিনই রাতে ক্যাম্পাসে থাকতে হয় এবং ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ দোকান ও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার খেতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার বন্ধ থাকায় এখন আর সেই সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। আবার, গত বছরের আগস্ট মাসে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ খাবারের দোকানগুলোও উচ্ছেদ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
২০২০ সালের মার্চে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি বিকেলেও চা-নাশতার ব্যবস্থা ছিল। রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাফেটেরিয়া চালু থাকত। কিন্তু ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাফেটেরিয়া পুনরায় চালু হলেও রাতের খাবার বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী খেতে আসেন। এর বিপরীতে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার জন্য একজন ম্যানেজার ও পাঁচজন রাঁধুনিসহ মোট ১৮ জন কর্মচারী রয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল । একারণে তারা রাতের খাবার বন্ধ রেখেছেন।
ভোগান্তির বিষয় উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাস থেকে হলে ফিরতে একটু দেরি হলেই ডাইনিংয়ে খাবার পাওয়া যায় না। ফলে তাদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরের হোটেলগুলোতে উচ্চ মূল্যে খাবার খেতে হয়। এছাড়াও খাবার শুরু হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে দুপুরের ২৮ টাকা মূল্যের সাধারণ মিল শেষ হয়ে যায়। ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে স্পেশাল খাবার খেতে হয়। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আরো পড়ুন: সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হবে রাবির ভর্তি পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বকুল হোসেন বলেন, ‘আগে যখন ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার চালু ছিল তখন খাবারে সমস্যা হতো না। এখন একটু রাত হলেই ডাইনিংয়ের খাবার শেষ হয়ে যায়। মাঝেমধ্যেই রাতের খাবার না খেয়ে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।’
কর্মচারী সংকটের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক এ.কে.এম. আরিফুল ইসলাম বলেন, ইদানীং ক্যাফেটেরিয়ায় পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষার্থী খেতে আসছেন। প্রতিদিন দুপুরে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী খেতে আসে। কিন্তু সেই অনুপাতে আমাদের কর্মচারী নেই। মূলত এই সংকটের কারণে আমরা রাতের খাবার বন্ধ রেখেছিলাম। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে চাইলেও লোকবল বাড়াতে পারছি না। আমরা লোকবল নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, তবে রাতের খাবার চালু করাতে আমরা প্রাথমিকভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা করলে রমজানের পরে আবারও রাতের খাবার চালু করতে পারবো। এজন্য সকল শিক্ষার্থীকে সাহায্য করতে আহ্বান জানাচ্ছি।