তথাকথিত উন্নত দেশ স্কুলে বন্দুক চালিয়ে শিশু হত্যা করে: ঢাবি ভিসি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, তথাকথিত উন্নত দেশ, যেখানে কিনা মানুষের মাথা নয় মিনিট হাটুতে চেপে মানুষের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। স্কুলে বন্দুক চালিয়ে শিশুদের হত্যা করে। সেসব দেশের লোকের মুখে যখন মানবতার কথা শুনি, অনেক অবাক লাগে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে আয়োজিত ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশে’র উদ্যোগে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, সবচেয়ে নিরপেক্ষ টার্ম হচ্ছে ধর্ম, যা বেশিরভাগ মানুষই ধারণ করে। আগে ধর্ম আসে, পরে আসে পার্থক্য। একটা শিশু জন্মগ্রহণ করার পর মা-বাবার অবর্তমানে সহোদর দ্বারা তার ধর্মীয় পরিচয় লাভ করে। সকল ধর্মেই রেলিজিয়াস সেক্টর এবং সাব-সেক্টর আছে। কিন্তু এটা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করা যাবে না।
আরও পড়ুন: স্কুল প্রাঙ্গণে গুলি করে ছাত্র হত্যা
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যে ব্যক্তি নিজের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সে নিঃসন্দেহে অন্য ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল।
চন্দ্রনাথ পোদ্দারের সঞ্চালনায় ও প্রীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এসময় ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ নামক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ বাহাউদ্দীন।
আরও পড়ুন: শিশুদের বুকে জড়িয়ে ধরেই গুলিবিদ্ধ হন শিক্ষক
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রশংসা করে ঢাবি উপাচার্য বলেন, সভ্যতায় সবচেয়ে বৃহৎ পরিবর্তন এসেছিলো সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে; ধর্মীয় কারণে নয়। এজন্যই ধর্মকে রেখে একটি নিউট্রাল বা কমন ভ্যালুকে ভিত্তি করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার মাটি, পরিবেশই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গোষ্ঠী এখানে সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু তা কখনো সফল হয়নি।
প্রগতিশীল শক্তির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সামনে রেখে অসাম্প্রদায়িক দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই পাঁচ বছর আগে প্রতিষ্ঠা হয় এই সম্প্রীতি বাংলাদেশের। নিজ ধর্মকে ভালোভাবে জানা, অন্যের ধর্মকে সম্মান জানানো, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই মানুষ এটা মনে প্রাণে ধারণ করাই সম্প্রীতি বাংলাদেশের মূল কথা।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অসাম্প্রদায়িকতার কথা মুখের বুলি হলে হবে না, এটাকে অন্তরে ধারণ করতে হবে। বিশ্বাস হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। নিজের জীবনে চর্চা করে যেতে হবে। বাঙালির হাজার বছরের পথচলার পেছনে মূল ভূমিকা হলো অসাম্প্রদায়িকতার, সম্প্রীতির।