৫৭ বছরে পা রাখলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আজ শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ৫৬ বছর পেরিয়ে ৫৭ বছরে পা দিচ্ছে আয়তনে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ২ হাজার ৩০০ একরের এই বিদ্যাপীঠটি। দিবসটি উপলক্ষে এবারও নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের। মাত্র দুশো ছাত্র, সাত জন শিক্ষক ও চারটি বিভাগ নিয়ে ২১০০ একর জমিতে শুরু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ৯টি অনুষদে ৪৮টি বিভাগ, ৬টি ইনস্টিটিউট, ৯২০ জন শিক্ষক ও প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী আছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য আছে ১৪টি আবাসিক হল ও ছাত্রাবাস রয়েছে।
চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তাই শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ১৯৮০ সালে চালু হয় শাটল ট্রেন। এজন্য শাটলের ক্যাম্পাস হিসেবেও পরিচিত চবি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ই পৃথিবীর একমাত্র শাটল ট্রেনের বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জন্ম নিয়েছেন অনেক গুনীজন, অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি। উপমহাদেশের খ্যাতিমান ভৌতবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জামাল নজরুল ইসলাম, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক আবুল ফজল, আলাউদ্দিন আল আজাদ, সৈয়দ আলী আহসান, মুর্তজা বশীর, ঢালী আল মামুন, সাবেক ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মান্নানসহ বহু কীর্তিমান মনীষী জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আরও পড়ুন: চবি ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে সবাই চেনেন।
চবি শিক্ষক ড. মো. শাহাদাত হোসেনের নতুন মাছের প্রজাতি শনাক্ত করা এবং প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী রক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য শিক্ষক মনজুরুল কিবরীয়া পেয়েছেন দেশি-বিদেশি সম্মাননা। ড. শেখ আফতাব উদ্দিনের কম খরচে সমুদ্র পানি সুপেয় করার পদ্ধতি আবিষ্কার, ড. আল আমিনের লেখা বই যুক্তরাষ্ট্রের ৬টি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেফারেন্স বুক হিসেবে নির্বাচন, অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান চৌধুরীর বঙ্গোপসাগর নিয়ে মানচিত্র তৈরিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক নিজ নিজ ক্ষেত্রে রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর।
এছাড়া বিশেষ অবদান রেখেছেন শিক্ষার্থীরাও। ব্যাঙের নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করে সর্বকনিষ্ঠ বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সাজিদ আলী হাওলাদার। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে চবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র শাখাওয়াত হাসান ও তার দলের নাম ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালনের উৎসব শুরু হবে। এরপর কেক কাটা, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রবন্ধ পাঠ, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চলবে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। ইতোমধ্যেই পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
এরপর বিকেল ৩টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজনে আবৃত্তি, নৃত্য, নাটকের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় ব্যান্ডদল গান পরিবেশন করবেন।