রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক মাসে ৫টি সাইকেল চুরি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ক্লাস চলাকালীন একাডেমিক ভবনগুলো থেকে প্রায়ই সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসেই পাঁচটি সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে তিনটি এবং ক্যাম্পাসের বাইরে দুটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে এরকম ঘটনার সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে দাবি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের। কিন্তু এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো চোরকে ধরতে পারেনি প্রশাসন।
ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে যে তিনজনের সাইকেল চুরি হয়েছে তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অনিল চাকমা, আরবি বিভাগের নূর আলম নেহাল ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আসমাউল ইসলাম।
ভুক্তভোগীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম ওয়াজেদ মিয়া অ্যাকাডেমিক ভবন, ড. মমতাজ উদ্দিন অ্যাকাডেমিক ভবন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ অ্যাকাডেমিক ভবন এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবন থেকেই বেশি চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরির ঘটনাগুলো আনুমানিক সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে হয়েছে। যখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে থাকেন।
সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, চুরির ঘটনায় জড়িত একটি চক্র সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতোই কাঁধে ব্যাগ নিয়ে একাডেমিক ভবনগুলোতে গিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তালা খুলে সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংস্কার নয়, মূল ক্যাম্পাসে ফিরতে চান চবির চারুকলার শিক্ষার্থীরা
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অনিল চাকমা জানান, গত কয়েক দিনে প্রায় প্রতিদিনই সাইকেল চুরি হয়েছে। আমার সাইকেল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টায় চুরি হয়েছিল। আমি তখন ক্লাসে ছিলাম। ঠিক আরা যখন ক্লাসে থাকবো তখনই চোর চক্রটি সাইকেল চুরি করে। এতে আমাদের বন্ধুদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, আমাদের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোতে নিরাপত্তাকর্মী ও সিসিটিভি আছে। তবুও প্রশাসন তাদের ধরতে বা চুরি বন্ধ করতে পারছে না। প্রশাসন যদি গ্যারেজের সংখ্যা বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে তাহলে এরকম ঘটনার ভুক্তভোগীদের জন্য উপকার হয়। কারণ আমার মতো অন্যরাও বৃত্তির টাকা বা ঋণ করে সাইকেল কিনেন। আর এত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকাতেও এসব সাইকেল চুরি হয়ে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী আসমাউল ইসলাম আলম বলেন, অনেকদিন আগেই আমার সাইকেল চুরি হয়েছে। তবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। তাই সাইকেল ফিরে পাবো কিনা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, যখন আমরা ক্লাসে থাকি ঘটনা সকাল ৯টা থেকে ১০টায় ঘটে। পরে গিয়ে দেখি সাইকেল নেই। পরে যখন আমরা অভিযোগ নিয়ে প্রক্টর অফিসে যাই তখন বেশিরভাগ সময়ই সিসিটিভি ফুটেজের দায়িত্বে যিনি আছেন তাকে পাওয়া যায় না। আর চোরও শনাক্ত হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আসাবুল হক বলেন, আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। সাইকেলগুলো মূলত অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে চুরি হয়েছে। যেহেতু চোর একজন সাধারণ শিক্ষার্থী সেজে চুরি করতে আসে তাই তাদেরকে শনাক্ত করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে এরই মধ্যে দুটি সাইকেল গ্যারেজের টেন্ডার পাস হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা হবে।