চবির এক হলের ডাইনিংয়ে ছাত্রদের বকেয়া দেড় লাখ

এফ রহমান ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক ক্যাশের উপরে বাকি না খাওয়ার আকুতি
এফ রহমান ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক ক্যাশের উপরে বাকি না খাওয়ার আকুতি  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের খাবারের নিম্নমান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে অনেক। তবে এর পেছনে ঘুরেফিরে সামনে চলে আসছে শিক্ষার্থীদের দায়বদ্ধতা। বিশেষত বিভিন্ন হলের ডাইনিং, ক্যাফেটেরিয়া এবং ঝুপড়িতে বাকি খেয়ে টাকা আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিয়ে নিয়মিত খাওয়া অনেকেরই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবিষয়ে মুখ খুলতেও ভয় পান ব্যবসায়ীরা। 

সম্প্রতি এফ রহমান ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক ক্যাশের উপরে লিখতে বাধ্য হন, 'সকলে নগদে খান, আমি বাজার করতে পারি না'।  

কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাজনীতিতে সক্রিয় কর্মীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাকি খেয়ে চলে যান। টাকা দিবে দিবে বলেও দেয় না। টাকা চাইলে বিভিন্ন উছিলায় হুমকি-ধমকি দিয়ে ধমিয়ে রাখেন তাদের। 

আরও পড়ুন: কৃষিগুচ্ছের চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ

শুধু আলাওল হল ডাইনিংয়ে বাকির পরিমাণ দাড়িয়েছে প্রায় এক লাখ ষাট হাজার টাকায়। টাকা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে ডাইনিং পরিচালনা ছাড়তে হয় ম্যানেজারকে। তার নাম মো: ইকবাল হোসেন। 

তিনি জানান, ২০১৬ সাল থেকে হলের ডাইনিং ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে আমার সংকট শুরু হয়। ছাত্রদের বাকি দিতে দিতে প্রায় এক লাখ ষাট হাজার টাকা হয়েছে। টাকা তো দেয় না বরং বিভিন্ন ইস্যুতে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। পরে আমি পরিচালকের দায়িত্ব ছেড়েছি।  

তিনি আরো বলেন, বাকিতে বাজার করে  আমি ডাইনিং চালিয়েছি দীর্ঘদিন। বাকি বিক্রি করতে গিয়ে আমার অবস্থা খারাপ। ছাত্ররা বাকি খেয়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে টাকা দেয় না। দেড় হাজার থেকে শুরু করে ৮ হাজার পর্যন্ত বাকি আছে একেকজনের কাছে।

যাদের কাছে টাকা থাকতো না তাদের আমি টাকা ছাড়াই খাবার সরবরাহ করেছি। তাদের হিসেব আলাদা। যারা টাকা দিবে বলে বাকি খেয়েছে তাদের হিসেব এতো বড় হয়েছে।

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ উদ্দিন বলেন, ক্যাম্পাসে খাবারের পরিবেশ এমনিতেই ভালো না। আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। কারণ, বাকি খেয়ে টাকা পরিশোধ না করলে খাবারের মান বৃদ্ধি হওয়া আশা করা যায় না। সবাই টাকা পরিশোধ করলে খাবারের মান স্বাভাবিক থাকতে বাধ্য করা যায়। খাবার খেতে তো টাকা দিতে হবে। 

এব্যাপারে আলাওল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরিদুর আলম বলেন, হলের ডাইনিংয়ে বাকির বিষয়টি আমি শুনেছি। বাকি দেওয়ার সময় বিষয়টি তার দেখা দরকার ছিল। প্রশাসন থেকে এবিষয়ে কিছু করার নেই। ম্যানেজার ইকবাল অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি আমাকে। সে জানালে কিছু করা যেতো। শিক্ষার্থীদেরও সচেতন হওয়া উচিত। কয়েকজনের জন্য আমার দু-তিনশো শিক্ষার্থী ঝামেলায় পড়ুক এটা আমি চাই না।  ম্যানেজাররা তো ডাইনিং চালিয়ে অনেক টাকা লাভ করেনা। ২৫ টাকায় এখন কি পাওয়া যায়? তারা তো বাড়ি থেকে এনে ডাইনিং চালাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ