‘প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাস্তরে ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ এখন সময়ের দাবি’
৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ডিজিটাল মাধ্যমে রূপান্তর করার আহবান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাস্তরে মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ এখন সময়ের দাবি।
আজ শনিবার (১১ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) আয়োজিত ৪র্থ শিল্পবিপ্লব বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ‘ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া লিংকেজ ইন দ্য এজ অব ফোরআইআর’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সম্মেলনে লাল তালিকাভুক্ত ড্যাফোডিলের প্রচার
মোস্তফা জব্বার বলেন, চক, ডাস্টারের মধ্যে শিক্ষা উপকরণগুলো সীমাবদ্ধ না রেখে ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ নিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে যথাযথ শিক্ষা উপকরণও নিশ্চিত করতে হবে। তিনি শিক্ষা উপকরণগুলো মাতৃভাষা বাংলায় রূপান্তরের পরামর্শ দেন।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সিনকস ইঞ্জিনিয়ার্সের পরিচালক নাসিক এম আক্কাস, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশন ফার্ম সেমস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম সারোয়ার এবং ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্সের (আইইইই) প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. সাইফুর রহমান।
আরও পড়ুন: ‘চতু্র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই নেতৃত্ব দিতে হবে’
প্যানেল আলোচনায় মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ৪র্থ শিল্পবিপ্লব বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. সারওয়ার মোর্শেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোস্তফা জব্বার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোর্স অনুমোদন দেওয়া উচিত যার ব্যবহারিক প্রয়োগ আছে। এছাড়া, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ও যোগাযোগ দক্ষতার ঘাটতি থাকলে স্নাতকের চূড়ান্ত ডিগ্রি না দেওয়ার জন্য তিনি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ও যোগাযোগ দক্ষতার অভাবে আমাদের গ্রাজুয়েটরা চাকরির বাজার থেকে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় এ দু’টি বিষয় অতীব গুরুত্ব দিতে হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী তার বক্তব্যে শুধু সার্ফিকেট বিতরণের উদ্দেশ্যে কোর্স বা বিষয় অনুমোদন না করে বরং বাস্তবতার নিরিখে ও কর্সংস্থানের সুযোগ আছে এমন কোর্স বা বিষয় অনুমোদনে ইউজিসির প্রতি আহবান জানান। তিনি তরুণদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে চাকরির পিছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে উঠার আহবান জানান।
আরও পড়ুন: ঢাবিকে গতানুগতিক শিক্ষা থেকে বের হতে হবে: ইউজিসি চেয়ারম্যান
তিনি গবেষক ও উদ্ভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু উদ্ভাবন করলেই হবে না, উদ্ভাবনের বাণিজ্যিকীকরণ নিশ্চিত করতে হবে এবং উদ্ভাবনের মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে। সরকার মেধাস্বত্ত্ব সংরক্ষণ সহজ করতে ইতোমধ্যে বিদ্যমান আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া, তিনি দেশের শিল্প-কলকারখানা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ৪র্থ শিল্পবিপ্লব বাস্তবায়নের জন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইনোভেশন এডুকেশন ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে এবং ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবোরেশান বৃদ্ধি করতে হবে।
প্যানেল আলোচনায় বক্তারা ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া প্লাটফর্ম গঠন, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলা, শিক্ষা ক্যারিকুলাম হালনাগাদ করাসহ তরুণদের আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলার আহবান জানান।