ভর্তি পরীক্ষা: কত ঘন্টা পড়বেন, যত ঘন্টা পড়লে মনে থাকে

কত ঘন্টা পড়বেন, যত ঘন্টা পড়লে মনে থাকে
কত ঘন্টা পড়বেন, যত ঘন্টা পড়লে মনে থাকে  © সংগৃহীত

উচ্চমাধ্যমিক শেষ হলেই একজন শিক্ষার্থী স্বপ্ন দেখতে শুরু করে যে বড় হয়ে সে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট কিংবা উচ্চ পদস্থ কোন কর্মকর্তা হবে। সেই স্বপ্নকে লালন করে দিনের পর দিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমও করতে থাকে। ফলে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণের মাধ্যমে পৌঁছাতে হয় কাঙ্ক্ষিত সেই লক্ষ্যে।

প্রতিবারের মতো এবারও সেই কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে ছুটে চলেছে দেশের হাজারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। যাদের স্বপ্ন হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পছন্দের বিষয়ে উচ্চ ডিগ্রী অর্জন। তবে সেই জন্য প্রয়োজন সঠিক নিয়মে পড়াশোনা। যখনই পড়াশোনা করুন, সেটা ১ ঘণ্টা করার পর ১০ মিনিট অন্তত ব্রেক নিন। একটু হেঁটে বা পায়চারী করে নিন, কারোর সঙ্গে একটু কথা বলে নিন, তবে বিরতি অবশ্যই নিন।

দিনে ১৭-১৮ ঘন্টা শুধু পড়াশোনা নিয়ে থাকলে, একঘেয়েমি, বিষণ্নতা, নার্ভাস ব্রেকডাউনের মতো সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় বা ঘন্টা নেই। যত ঘন্টা পড়লে, নিজের কাছে জীবনের স্বাভাবিকতা হারিয়ে যাবে না, ঠিক তত ঘন্টাই পড়া উচিৎ।

যদি ১৭-১৮ ঘন্টা পড়লে কোনো সমস্যা না হয়, কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাব আসা অসম্ভব কিছু নয় পরবর্তী সময়ে। তাই ওই রকম ঘন্টার হিসেব করে পড়তে হবে না। পড়ার মতো করেই পড়তে হবে। সেটা যদি তিন চার ঘন্টা ও হয়, সমস্যা নেই। বইয়ের চাপে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ঝুঁকে পড়লে তখন সমর্থন করা যাবে না। আপনি যেটা পড়বেন সেটা ভালোবেসে, জোর করে পড়ার দরকার নেই। কারণ তখন মানসিক চাপ পড়ে ভীষণ ভাবে। সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।

পড়া মনে থাকে না বা ভুলে যায় এই সমস্যাটা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের। অনেকেই আছে বিভিন্ন কৌশল নিয়ে পড়াশোনা করে যেটা সবচেয়ে ভুল। পড়া মনে রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরী আগ্রহ। বুঝে না পড়লে সেই পড়াটা মনে থাকবে না।

আরও পড়ুন: পাসের হার সর্বনিম্ন ‘চ’ ইউনিটে, ‘গ’ ইউনিটে সর্বোচ্চ

পড়া মনে রাখার কৌশল

লিখে পড়লে আমাদের ব্রেনের যে অংশগুলো জড়িত থাকে তা তথ্যকে স্থায়ী মেমোরীতে রূপান্তর করতে সহায়তা করে। এছাড়া মানুষ কোন কিছু লিখতে চাইলে সেই বিষয়ের প্রতি মনোযোগ বেড়ে যায়। 

পড়ার সময় মার্কার ব্যবহারেএকটা বড় কৌশল। যখন কোন কিছু মার্ক করা হয় তখন ঐ বাক্যের উপর আগ্রহ বেড়ে যায়।  ফলে মনে রাখতে সুবিধা হয়।

বিভিন্ন  গবেষণায় দেখা গেছে সকাল দশটার আগে মানুষের ব্রেন ক্রিয়াশীল হয় না। ধীরে ধীরে এই সময়ের পর থেকে ব্রেনের ক্রিয়াশীলতা বাড়তে থাকে। বিকালের পরে ব্রেনের ক্রিয়াশীলতা বাড়ে। তাই সকালের পড়া থেকে বিকাল বা সন্ধ্যার পর পড়া সবচেয়ে বেশী কার্যকর।

শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না পাশাপাশি প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। ব্রেন মূলত স্মৃতি তৈরির কাজ করে ঘুমের ভেতর। গবেষণায় দেখা গেছে, সারাদিনের কাজ বা ঘটনাগুলো ঘুমের সময় মেমোরিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে যে কোন তথ্য মেমোরিতে রূপান্তরিত করতে চাইলে পড়াশোনার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।

মুখস্থ বিদ্যা পড়া নষ্ট করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। পড়াশোনার আনন্দও মাটি করে দেয়। কিছু না বুঝে মুখস্থ করলে সেটা বেশিদিন স্মৃতিতে ধরে রাখা যায় না। কিন্তু তার মানে এই নয় সচেতনভাবে কোন কিছু মুখস্থ করা যাবে না। কিছু তথ্য যেমন: সাল, তারিখ, বইয়ের নাম, ব্যাক্তির নাম, বিজ্ঞানের কোন সূত্র ইত্যাদি অবশ্যই বুঝে মুখস্থ করতে হবে।

আমরা সারাদিন যত কিছু পড়ি শুনি জানি বা দেখি তা পাঁচ দিন পর চার ভাগের তিন ভাগই ভুলে যাই। গুরুত্বপূর্ণ কিছু পড়ে আগামীকাল ঘুমানোর আগে উক্ত পড়া রিভাইজ দেয়া উচিত। কিছুদিন পর পড়াটা পুনরায় রিভাইজ দিলে দীর্ঘদিন মনে থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ