শবে কদরের ফজিলত
লাইলাতুল কদর রমজান মাসের একটি মহিমান্বিত রাতের নাম। এ রাতের ফজিলত ও মর্যাদা স্বয়ং আল্লাহ তাআলা অনেক বৃদ্ধি করেছেন। কেননা এ রাতেই পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছে। এ রাতকে নিয়ে পবিত্র কুরআনে একটি সূরাও নাজিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে সূরা আল-কদরে বর্ণিত আছে, 'নিশ্চয়ই আমি তা (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কী জানো?’ (আয়াত: ১-২)
এ সম্পর্কে সূরা দুখানে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন) নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় (লাওহে মাহফুজ থেকে ফেরেশতাদের কাছে) স্থিরিকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।' (আয়াত: ২-৬)
আরও পড়ুন: রমজান মাসে ফজিলত বাড়ানোর উপায়
এ রাতের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। শান্তি আর শান্তি, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত (নাজিল হতে) থাকে।' ( সূরা: আল-কদর, আয়াত: ৩-৫)
এ রাত সম্পর্কে হাদিসে এসেছে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গোনাহ মাফের কথা উল্লেখ করেছেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদিস গ্রন্থ সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে , রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সাওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদর তথা (নির্ধারিত মর্যাদার রাত) জেগে ইবাদাত করে, তার বিগত জীবনের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।' (বুখারি)
আরও পড়ুন: আজ বিশ্ব ধরিত্রী দিবস
যেদিনে শবে কদরের রাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
ঠিক কবে শবে কদরের রাত সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট বা নির্দিষ্ট করে বলার বা জানার কোনো সুযোগ নেই। তবে, এটি সুস্পষ্ট যে তা রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় কোনো একটি রাত হবে। এই অনুসারে শবে কদর হবে, রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তারিখের কোনো এক রাতে। অর্থাৎ ২০ রমজান দিবাগত রাত, ২২ রমজান দিবাগত রাত, ২৪ রমজান দিবাগত রাত, ২৬ রমজান দিবাগত রাত এবং ২৮ রমজান দিবাগত রাতে লাইলাতুল কদর হবে।
পবিত্র হাদিস গ্রন্থ সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতদের লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করতে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে তোমরা কদরের রাত সন্ধান কর।' (বুখারি)