জিপিএ ৫ না পেয়েও ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় যে কৌশলে অষ্টম রবিউল
রবিউল ইসলাম। ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘খ’ ইউনিটে অষ্টম স্থান অর্জন করেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির আইন বিভাগে পড়াশোনা করছেন।
এসএসসিতে জিপিএ পেয়েছিলেন ৪ দশমিক ৫৬ এবং এইচএসসিতে রবিউল পেয়েছিলেন জিপিএ ৪ দশমিক ৫০। কম জিপিএ এর কারণে শুরুতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন রবিউল। তিনি বলেন, কম জিপিএ থাকার কারণে আমাকে ভর্তি পরীক্ষায় একটু বেশি কষ্ট করতে হয়েছে। যেখানে অন্যরা ৮-১০ ঘণ্টা ঘুমাতো আমি ততো ঘুমাতে পারতাম না। আমি প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা পড়েছি। আস্তে আস্তে নিজেকে ডেভেলপ করি। শেষের দিকে এমন হয়েছে যে, আমি দিনে মাত্র তিন ঘণ্টা ঘুমিয়েছি।
রবিউল বলেন, ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো এবং আইন বিভাগেই পড়বো। কিন্তু অটোপাসের কারণে এইচএসসিতে নিজেকে প্রমাণ করতে পারিনি। যে কারণে আমার জিপিএ হয় ৪ দশমিক ৫০। এই জিপিএ নিয়ে হতাশা চলে আসে। আমার মনে হতে থাকে, হাজার হাজার এ প্লাসের সঙ্গে আমি কী প্রতিযোগীতা করতে পারবো?
আরও পড়ুন- যে রুটিন মেনে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম মিশোরী মুনমুন
বড় ভাইদের পরামর্শ নিতে গেলেও তারা কম জিপিএয়ের কথা উল্লেখ করেন। তখন চিন্তা করি, পেছনে তাকিয়ে লাভ নেই। সামনে এগুতে হবে। দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। ভর্তি পরীক্ষায় নিজেকে প্রমাণ করতে পারি কিনা সেটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেই।
যাদের কম জিপিএ আছে তাদের বলবো, হতাশ হওয়া কিছু নেই। ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ এর ওপর নির্ভর করে ভর্তি করানো হয় না। ভর্তি নির্ভর করে ভর্তি পরীক্ষার ওপর। ঘুম এবং পড়ার মধ্যে ব্যালেন্স করতে হবে। জিপিএ নিয়ে চিন্তা না করে ভর্তি পরীক্ষায় নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার কোনো শর্টকাট পদ্ধতি নেই। আগে প্রশ্নের ধরণ বুঝতে হবে। এজন্য একটা প্রশ্ন ব্যাংক লাগবে। প্রশ্নের ধরণ বুঝে গেলে সেই অনুযায়ী, প্রস্তুতি নিতে হবে। আমি একটু ফাঁকিবাজ ছিলাম। তাই যেসব টপিক অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে সেগুলো বাদ দিয়ে গেছি।
আরও পড়ুন- বেশি বেশি পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে যাচাই করে নিতে হবে
মুখস্ত বিদ্যা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া যায় না। ছোটবেলা থেকে আমরা শিখে এসেছি একটা প্যারাগ্রাফ শিখলে ১০টা প্যারাগ্রাফ শেখা হয়ে যাবে। এমন করা উচিত হবে না। পরীক্ষার খাতায় তথ্য নির্ভর লেখা লিখতে হবে। এজন্য বাসায় লেখা প্র্যাক্টিস করা জরুরি। বইয়ের পাঠ পরিচিত পড়তে হবে। পাঠ্য বই সবসময় ফলো করতে হবে। সে অনুযায়ী লিখতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোয়ালিটি দেখে কোয়ান্টিটি নয়।
ভর্তি পরীক্ষার সময়টাতে মোবাইলে অযথা সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষকে লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।