মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের ১০ পরামর্শ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০১৯, ১১:৪৮ PM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৩:৪৮ PM
ছোটবেলায় যখন তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করত, ‘বড় হয়ে কি হতে চাও?’ তখন হয়ত আধো আধো বুলিতে ‘ডাক্তার’ শব্দটা বেরিয়ে আসত তোমার মুখ থেকে। তারপর পারিবারিক আড্ডায়, পরীক্ষার খাতায় জীবনের লক্ষ্য রচনা লেখার সময় বারবারই হয়ত এই শব্দটা তোমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে যখন তুমি দাঁড়িয়ে, তখন আজন্ম লালিত এই স্বপ্ন পূরণের স্বার্থে তোমার অবশ্যই কিছু জানা দরকার। তাই আজ মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের ১০টি পরামর্শ দিলাম।
১. তোমার স্বপ্নের গভীরতা উপলব্ধি করো। তুমি স্বপ্ন দেখতে শেখার অনেক আগেই তোমার বাবা-মা তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন যে তাদের সন্তান ডাক্তার হবে। আজ তুমি সেই স্বপ্ন পূরনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছো।
২. টেক্সট বই পড়। চান্স পাওয়ার জন্য এটাই এনাফ। টেক্সট বইয়ে ভাল দক্ষতা থাকলে কোচিং এর অতিরিক্ত নোট বই পড়তে পারো। কখনো টেক্সট বই বাদ দিয়ে নোট বইকে প্রাধান্য দিবে না। বাজারের ফুলকলি, আনারকলি যত চমকপ্রদ গাইডবই আছে না কেন এগুলি এড়িয়ে চলো। মনে রাখবে, যারা চান্স পায় তাদের ৯০-৯৫% স্টুডেন্টই গাইডবই পড়ে না।
৩. প্রচুর অনুশীলন করো। প্রশ্নব্যাংক সলভ করো। কোচিং থেকে অনুশীলন করার জন্য যে সব ম্যাটেরিয়ালস দেয়া হয় সেগুলি শেল্ফে সাজিয়ে রাখবে না। যত বেশি সম্ভব প্রাক্টিস করো।
৪. কোচিং সেন্টারে সৎভাবে পরীক্ষা দাও। চুরি করে, বন্ধুদের উত্তরপত্র দেখে অনেক বেশি নাম্বার পেয়ে কোন লাভ নেই। তুমি পৃথিবীর সব থেকে মহৎ পেশায় আসতে চাচ্ছো। সেটার শুরুটা অসততা দিয়ে পরিপূর্ণ থাকলে আল্লাহর সাহায্য কখনো পাবে না।
৫. হতাশ হয়ো না। মনে রাখবে, তোমার পরিশ্রম পৃথিবীর কেউ দেখুক বা না দেখুক, উপরে একজন দেখেন। এবং ফলাফলটাও উপর থেকেই আসে। আর যিনি সর্বজ্ঞ, সর্বদ্রষ্টা তিনি কখনো পরিশ্রমীদের নিরাশ করেন না।
৬. আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন কর। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত, সৃষ্টিকর্তার স্মরণে আল্ফা ওয়েভ বেশি এক্টিভ হয়। আল্ফা ওয়েভ তোমার স্মৃতিশক্তি ও ক্রিয়েটিভি বাড়ায় এবং ডিপ্রেশান কমায়। নিয়মিত নামায পড়ো। তোমার প্রয়োজন, তোমার সকল চাহিদা আল্লাহর সাথে শেয়ার করো।
৭. পড়াশুনায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কোচিং সেন্টারের নাম্বার নিয়ে হতাশ হয়ো না। চেষ্টা করতে থাকুন যতটুকু তোমার পক্ষে সম্ভব! মনে রাখবে, চান্স পাওয়ার জন্য কোচিং সেন্টারের নাম্বার বা মেরিট পজিশান কোন ফ্যাক্টর নয়। তবে পরীক্ষাকে গুরুত্ব দাও। বেশি নাম্বার পাওয়ার চেষ্টা করো। ডিপ্রেশান চলে আসলে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও, কোচিং সেন্টারের ভাইয়াদের সাথে কন্টাক্ট করো।
৮. যাদের কোচিং করার সামর্থ্য নেই তারা শুধুমাত্র টেক্সট বই পড়ো। নতুন এডিশানের টেক্সটবই ফলো করতে হবে। গাইডবই কিনবে না। যেসব বন্ধু কোচিং করছে তাদের কাছ থেকে কোচিং এর প্রশ্ন ফটোকপি করে নিজে পরীক্ষা দাও। কোচিং না করেও অনেকে চান্স পায়। বিশ্বাস রাখো, তোমার সৃষ্টিকর্তা এবং তোমার নিজের প্রতি। তুমি পারবে। তোমাকে পারতেই হবে।
৯. অনলাইন থেকে আগামী তিনমাসের জন্য বিদায় নাও। লাইভ ক্লাস বা পড়াশুনার পারপাসে অনলাইনে আসলে কাজ মিটে যাওয়ার সাথে সাথে অনলাইন থেকে বিদায় নাও। সবচেয়ে ভাল হয় যেকোন স্মার্ট ডিভাইস (স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, টেলিভিশন) থেকে দূরে থাকতে পারলে।
১০. যুদ্ধের ফলাফল জানার আগে হার মানবে না। যতক্ষন না তুমি দেখতে পাচ্ছ যে, তুমি চান্স পেয়ে গেছ ততক্ষণ প্রচেষ্টা থামাবে না। তুমি পারবে, তুমি অবশ্যই পারবে।
ভাল কিছু পাওয়ার জন্য একটু কষ্ট তো করতেই হবে, তাই না? সবার জন্য শুভকামনা।
ফাইয়াজ আল-মুহাইমিন
ঢাকা মেডিকেল কলেজ, কে-৭৫
২০১৭-১৮ সেশন