বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কাট মার্ক পেতে করণীয়

এটিএম রুহুল আমিন 
এটিএম রুহুল আমিন   © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ক্যারিয়ার গঠনে অধিকাংশ চাকরি প্রত্যাশী তরুণ-তরুণীর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। ক্যাডার সার্ভিসের প্রতিটি ক্যাডারে দেশমাতৃকার সেবা প্রদানের পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদা, ঐতিহ্য, পেশাগত বৈচিত্র্য ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সমন্বয় থাকায় চাকরি বাজারের তুখোড় মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে লড়াই করে নিজের পদটি বাগিয়ে নিতে রাত দিন উজাড় করে পরিশ্রম করতে হয়।

তবে বাস্তবতা হলো বিসিএসের সদর দরজার চাবি হলো প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এখানকার ২০০ মার্কসের ১ মার্কসও মূল পরীক্ষায় বিবেচিত না হলেও এই ধাপ উৎরাতে না পারলে আপনি লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। আর সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো লিখিত এবং ভাইভাতে পাস মার্কস কত জানা থাকলেও প্রিলিমিনারিতে কোনো নির্দিষ্ট পাস মার্কস নেই। এমনকি কতজন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হবে তাও আগে থেকে জানার উপায় নেই

তবে ৩৫তম বিসিএস থেকে সর্বশেষ সাধারণ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, প্রশ্নের স্ট্যান্ডার্ডের ওপর নির্ভর করে গড়ে ৯৫-১২২ মার্কস পর্যন্ত প্রিলিমিনারি কাট অফ মার্কস হতে পারে (সম্ভাব্য)। সাম্প্রতিক বিসিএস পরীক্ষাগুলোতে বিপিএসসি লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রার্থী সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম নির্বাচন করছে; তাই স্বাভাবিকভাবেই কাট অফ মার্কস উচ্চ হচ্ছে

তাই প্রস্তুতির শুরুতেই যদি আমরা উচ্চ কাট অফ মার্কস ধরে অগ্রসর হই তাহলে নিজেকে গ্রিন জোনে রাখা সহজ হবে। তবে সবগুলো প্যারামিটার বিবেচনা করে এটা মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, বর্তমান বাস্তবতায় ১৩০ মার্কসের উপর কাট অফ মার্কস যাওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই বললেই চলে।
তাই যারা বিসিএস প্রিলিমিনারি নিয়ে ভাবছেন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু পরামর্শ: কে কবে থেকে প্রিপারেশন শুরু করছেন তার ওপর নির্ভর করে পরামর্শগুলো ভিন্নতার দাবি রাখে। কিন্তু স্বল্প পরিসরে এতো দীর্ঘ আলোচনা করার সুযোগ নেই। তাই আমি জেনারেলাইজড একটা আলোচনা করব

আলোচনার সুবিধার জন্য ধরে নিচ্ছি আপনার হাতে কমপক্ষে ৬ মাস সময় আছে এবং আপাতত প্রিলির প্রস্তুতি ছাড়া আর কোনো প্রিপারেশন নিয়ে আপনি ভাবছেন না (এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে একজন আদর্শ প্রার্থী হতে হলে আপনাকে লিখিত এবং ভাইভার বিষয়ও মাথায় রেখে অগ্রসর হতে হবে)।

আমাদের ভিশন: প্রিলিমিনারিতে ১৩০-এর আশেপাশে স্কোর করা। এ ভিশন বাস্তবায়নে আমাদেরকে নিচের মিশনগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রথমেই বিপিএসসির ওয়েবসাইট হতে প্রিলিমিনারি সিলেবাস প্রিন্ট করে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসটা কয়েকবার পড়বেন...পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়বেন।

দুর্বলতা-সবলতা নির্ধারণ

সিলেবাসের অধিকাংশ টপিকই আমাদের পূর্বপরিচিত। তাই প্রত্যেকেরই এক বা একাধিক বিষয়ে ভালো/মোটামুটি মানের দখল থাকে। আবার কিছু বিষয়ে অনেক বেশি দুর্বলতাও থাকতে পারে। যেমন: ইংরেজি ভাষা (২০)+ গণিত (১৫)+ মানসিক দক্ষতা (১৫)+ বাংলা ভাষা (ব্যাকরণ) (১৫)+ বিজ্ঞান (১৫) = ৮০ মার্কস আমার সবল দিক। এখানে আমি গড়ে ৭০% অর্থাৎ প্রায় ৫৬ নম্বর পেতে পারি।

সিলেবাসের অন্য ১২০ নাম্বারে আমার সাবজেক্ট সাপেক্ষে বিভিন্ন মাত্রায় দুর্বলতা আছে। তাই গড়ে ৩০% পেতে পারি। ১২০ এর ৩০% = ৩৬। তাহলে আমার সম্ভাব্য নম্বর ৫৬ + ৩৬ = ৯২।


সত্যি বলতে প্রায় প্রতিটি প্রার্থীরই গড়ে ৮০-৯২ মার্কস পাওয়ার অ্যাবিলিটি আছে। পরবর্তী প্রতিটি মার্কস অর্জনের জন্য পরিশ্রম করতে হবে, নিজের মেধার সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটাতে হবে।

অনেক অ্যানালিসিস হলো। চলুন এবার নেক্সট মিশন শুরু করা যাক। ৩০% কে ৭০-৮০% অ্যাকুরিসিতে নিয়ে যাওয়া, পাশাপাশি সবল বিষয়গুলোতে নিজের দক্ষতা ধরে রাখা। সময় নিয়ে বিগত বিসিএস প্রিলিমিনারির সবগুলো প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ বুঝে বুঝে পড়ে নিতে হবে। অবশ্যই পড়তে হবে... আপনাকে পড়তেই হবে।

বাংলা ও ইংরেজির ৭০এ ৪৫ পেতে করণীয়:

বাংলা সাহিত্য

আধুনিক যুগ: ১০

নবম-দশম শ্রেণি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর টেক্সট বইয়ে উল্লিখিত সকল কবি-লেখক পরিচিতি অংশ পড়ে নিজের মতো নোট করে নিতে পারেন। ৩৫তম বিসিএসের পূর্বে পিএসসির সিলেবাসে উল্লিখিত ১১ জন দিকপাল সাহিত্যেকের বিস্তারিত, বিশেষ বৈশিষ্ট্যের/সাহিত্য বিকাশে উল্লেখযোগ্য পত্রিকা ও সম্পাদকের নাম, বিখ্যাত সাহিত্যেকদের ছদ্মনাম, বাঙালির ঐতিহ্য ও জাতীয় আন্দোলনসমূহের সাথে সম্পৃক্ত সাহিত্যকর্মের নাম, বিগত পরীক্ষায় আসা উক্তি/উদ্ধৃতিসমূহ (এগুলো ভুল করা যাবে না, পূর্বে আসে নাই এমন কোনো উক্তি/উদ্ধৃতি না পারলে সমস্যা নেই)
প্রাচীন ও মধ্য যুগ: ০৫

চর্যাপদ ও শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বিস্তারিত, অন্যান্য সাহিত্য ধারাগুলোর আদি/বিখ্যাত গ্রন্থ ও প্রধান লেখক/কবি এবং সংশ্লিষ্ট ধারার মূল বিষয়বস্তু জানলেই এখান থেকে ভালো মার্কস পাওয়া সম্ভব। অর্থাৎ এই অংশে গড়ে ১৩-১৪ মার্কস পাওয়া দুষ্কর নয়।
বাংলা ভাষা/ব্যাকরণ: ১৫

নবম-দশম শ্রেণির পুরাতন এবং বর্তমান ভার্সনের দুটো বই সমন্বয় করে পড়তে হবে। পাশাপাশি প্রয়োগ-অপ্রয়োগ, বানানরীতি/বানান, প্রতিশব্দ, বাগধারা, বিপরীত শব্দ, সমাস, এক কথায় প্রকাশ প্রভৃতি পড়লেই অনায়াসে ১০-১২ মার্কস পাওয়া সম্ভব।

ইংরেজি ভাষা/গ্র্যামার: ২০

সাধারণত অ্যাডভান্সড লেভেলের প্রশ্ন এখানে খুব একটা করা হয় না। গ্রামারের উপর মৌলিক জ্ঞান দিয়েই এই অংশ ভালো মার্কস পাওয়া সম্ভব। যা যা গুরুত্ব দিয়ে পড়া উচিত- ব্যতিক্রম নিয়মের Number, Gender, Degree, Subject Verb Agreement তাছাড়া Clause, Phrases, Different types of Sentences, Preposition, Voice, Narration, Gerund, Conditionals, Determiner, Idioms বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা কমন Spelling গুলো পড়ে নেয়া যেতে পারে।

ভোকাবুলারি হতে ২-৩ মার্কসের প্রশ্ন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ১ হাজার শব্দের একটি তালিকা সংগ্রহ করে তা নিয়মিত পড়া যেতে পারে। ভবিষ্যতে লিখিত পরীক্ষায়/অন্য চাকরির পরীক্ষায়ও কাজে লাগবে। Letter/Paragraph অংশ থেকে খুবই কম প্রশ্ন হয়। তবুও কোনো একটি গ্রামার বই থেকে এগুলোর মৌলিক নিয়মগুলো দেখে নেওয়া উচিত। এখান থেকে আমাদের প্রত্যাশিত মার্কস ১৩-১৫।

ইংরেজি সাহিত্য: ১৫

ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী ব্যতীত এই অংশ প্রায় সবার জন্যই অপরিচিত। তবে সিলেবাস বুঝে পরিকল্পিত উপায়ে পড়লে এখান থেকে ৮-১০ মার্কস সংগ্রহ করা কঠিন কিছুই নয়। এক্ষেত্রে ২৫-২৮ জন লেখকের একটি তালিকা করে বাজারে প্রচলিত যেকোনো দুটি বইয়ের সমন্বয়ে নোট করে বারংবার রিভিশন দিতে হবে। ভিক্টোরিয়ান এবং রোমান্টিক পিরিয়ডের কবি-সাহিত্যিকগণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

এছাড়াও বিশ্ববিখ্যাত সাহিত্যকর্মগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে মূল চরিত্র  লেখকের নামসহ পড়ে নিতে হবে। শেক্সপিয়ার এবং বার্নাড শ-এর সাহিত্যের প্রধান চরিত্রগুলোর নাম জানা যেতে পারে।

সাধারণ জ্ঞানের ৬০-এ ৪০

বাংলাদেশ বিষয়াবলি: ৩০

বিগত প্রশ্ন থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন কমন পড়ে। সংবিধানের ৩ নম্বরও ধরাছোঁয়ার মধ্যেই থাকে। তাছাড়া নিম্নোক্ত বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিলে এখান থেকে ২০-২২ মার্কস হোল্ড করা সহজসাধ্য। যেমন: ১৯৪৭-১৯৭৫সালের ঘটনাপ্রবাহ, বর্তমান সরকারের সাফল্যসমূহ, অর্থনৈতিক সমীক্ষার গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো, আলোচিত ব্যক্তিত্ব, আমাদের ভৌগোলিক বিন্যাস, কৃষিজ বিষয়াদি প্রভৃতি। এক্ষেত্রে নবম-দশম শ্রেণির ইতিহাস/বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি বইসহ অন্যান্য সহায়ক বইয়ের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি: ২০

পরিবেশ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থা/চুক্তি/প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংস্থা, বিভিন্ন সীমারেখা ও প্রণালি, বিরোধপূর্ণ এলাকা, আন্তর্জাতিক জোট, গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থার সদর দপ্তর, আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর, গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক স্থান, জাতিসংঘ, সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি, আলোচিত ভৌগোলিক স্থান/দেশ কার দখলে ছিল/আছে প্রভৃতি পড়লে এখান থেকে ১২-১৪ নম্বর আশা করা যায়।

এক্ষেত্রে হাতের কাছে সর্বত্র তথ্যসমৃদ্ধ মানচিত্র রাখা উচিত এবং নিয়মিতভাবে মানচিত্র থেকে পড়তে হবে। পাশাপাশি পত্রিকা হতে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং সম্পাদকীয় অংশ পড়তে হবে।

আরও পড়ুন: আমাকে একদিনও বেকার থাকতে হয়নি: ৪৩ বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডার রুহুল আমিন

ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা: ১০

বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির অনেক টপিকই এখানে মার্জ করে যায়। ফলে সিলেবাস কমে আসে... নবম/দশম শ্রেণির ভূগোল বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে নিলে এখানে ৬-৭ নম্বর পাওয়া অসম্ভব নয়।

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন: ১০

এখানে অনেক ক্ষেত্রে কমন সেন্স ব্যবহার করে উত্তর করতে হয়। আবার মাঝে মধ্যে কিছু কনফিউজিং বিদঘুটে প্রশ্ন হয়ে থাকে, যার সঠিক উত্তর হয়তো প্রশ্নকর্তাই জানেন শুধু। তবে সুশাসন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ইউএনডিপি, জাতিসংঘ প্রভৃতি সংস্থার বিভিন্ন সংজ্ঞা, নির্ধারিত বৈশিষ্ট্যে/ভিত্তির সংখ্যা, গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার সাল+অ্যারিস্টটল, বার্ট্রান্ড রাসেল, প্লেটো, ম্যাক্স ভেভার, ইমানুয়েল ক্যান্ট, ম্যাকিয়াভেলি প্রমুখ মনীষীর বিখ্যাত গ্রন্থ ও উদ্ধৃতি, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, তথ্য অধিকার আইন, ই-গভর্ন্যান্স প্রভৃতি পড়লে ৫ মার্ক পাওয়া সম্ভব। 

উল্লেখ্য যে, শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে এই অংশের উত্তর করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান অনেক হলো, এবার গণিত-বিজ্ঞানের খোঁজ নেয়া যাক।

গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় ৩০-এ ২০-২২ :

গাণিতিক যুক্তি: ১৫

সিলেবাসে থাকা প্রায় সব টপিক থেকেই ঘুরে ফিরে প্রশ্ন আসে। বিগত বিসিএসে সিলেবাসের বাইরে থেকে কোনো টপিক থেকে প্রশ্ন আসলে ওই টপিকও পড়ে নিতে হবে। নবম/দশম শ্রেণির গণিত এবং উচ্চতর গণিত বইয়ের সিলেবাস সংশ্লিষ্ট অঙ্কগুলো উদাহরণের অংশসহ বারবার অনুশীলন করতে হবে তাহলে এখানে ১০-১১ মার্কস পাওয়া সহজ হবে।

মানসিক দক্ষতা ১৫:

সত্যি বলতে এই অংশটা খুবই মজার এবং কম-বেশি সবাই এখানে অনায়াসে ১০-১২ মার্কস পেয়ে যায়। এই অংশের জন্য আলাদাভাবে তেমন কিছু পড়ার দরকার পড়ে না, অন্যান্য অংশের প্রস্তুতি নিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এর ৭০-৮০% প্রিপারেশন হয়ে যায়।

বিগত প্রিলি এবং লিখিত পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো পড়াই যথেষ্ট। (হুবহু কমন আসবে না, অনুরূপ/একই প্যাটার্নের প্রশ্ন হবে)।

দৈনন্দিন বিজ্ঞান + কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির ৩০-এ ২০:

দৈনন্দিন বিজ্ঞান ১৫: 

নন-সাইন্স স্টুডেন্টদের অনেকের কাছেই এই অংশ জটিল মনে হয়। এর মূল কারণ স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর পর দীর্ঘ একটা সময় বিজ্ঞানচর্চায় ছেদ পড়া। সাধারণত অধিকাংশ প্রশ্নই স্কুল লেভেলের বই থেকেই হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ৮ম এবং নবম দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইগুলো দেখা যেতে পারে।

জীববিজ্ঞানসংক্রান্ত অধ্যায়গুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে পড়া উচিত। উচ্চমাধ্যমিক রসায়ন, শ্রদ্ধেয় হাজারি নাগ স্যারের বইয়ের অনুশীলনী অংশে থাকা এমসিকিউ প্রশ্নাবলি কোনো জুনিয়রের বই থেকে ফটোকপি করে এনে কয়েকবার দেখা যেতে পারে। উপর্যুক্ত বিষয়গুলো অনুসরণে ৯-১১ মার্কস ক্যারি করা সম্ভব। 

কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি ১৫ :

গত কয়েক বিসিএসের প্রিলিমিনারির প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এই অংশের প্রশ্ন দিনকে দিন কিছুটা কঠিন হচ্ছে। তবে নির্দিষ্ট কয়েকটি টপিক থেকে নিয়মিত প্রশ্ন হচ্ছে। যেমন: নম্বর সিস্টেম, মেমরি, বুলিয়ান অ্যালজেবরা/উপপাদ্য, ইনপুট-আউটপুট ডিভাইস, লজিক গেইট, হট-স্পট প্রযুক্তি, LAN,P AN, MAN, WAN, জনপ্রিয় বিভিন্ন অ্যাপস ও সার্চ ইঞ্জিন/ওয়েবসাইটের নাম, ডেটাবেইজ সম্পর্কিত প্রশ্ন  প্রভৃতি। এই বিষয়গুলোতে সময় দিলে এখানে গড়ে ৮-৯ মার্কস আপনি পেতেই পারেন।

সত্যি বলতে যত সহজে আমরা এখানে ১৩০-এর হিসাব মিলিয়ে ফেলেছি, ব্যাপারটা তত জলবৎ তরলং নয়। আমরা আমাদের সমীকরণে নেগেটিভ মার্কিং বিষয়টি এতক্ষণ মাথায়ই আনিনি।

বাস্তবে কিছু কিছু বিষয়ে আপনি আপনার ধারণার চেয়েও বেশি ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেন, বিপরীতক্রমে কোনো কোনো বিষয়ে প্রত্যাশার চেয়েও খারাপ করতে পারেন। এই ভালো খারাপের মিশ্রণে গড়ে আপনি হয়তো ১২০-১২৫ মার্কস ধরে রাখতে পারবেন। আপনার প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ মার্কস কর্তিত হবে। আপনাকে নেগেটিভ মার্কস বাদ দিয়ে ১২০-১২৫ পেতে হবে।

পরীক্ষার হলে স্নায়ুবিক চাপ, কিংবা নানাবিধ কারণে ২/১টা সিলি মিসটেকও আপনার হয়ে যেতে পারে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় বেশি বেশি মডেল টেস্ট দেওয়া। বর্তমানে বেশ কয়েকটি অনলাইন কোয়ালিটি প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে আপনি নিয়মিত পরীক্ষা দিতে পারেন। অফ লাইনেও মডেল টেস্ট দিতে পারেন। মডেল টেস্টের বই কিনে নিজে নিজেও মডেল টেস্ট দিতে পারেন।

বারংবার মডেল টেস্ট দিয়ে ভুল উত্তর পরিহার করার অভ্যাস করবেন। শতভাগ নিশ্চিত না হলে  উত্তর করা থেকে বিরত থাকবেন। নিয়মিত মডেল টেস্ট দিলে আপনি প্রশ্নের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী কত মার্ক পাওয়া উচিত তাও অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন। যা মূল পরীক্ষায় আপনাকে ডিসিশন নিতে এবং শান্ত রাখতে সাহায্য করবে।

বাইল্ড গেজ থেকে বিরত থাকবেন। কনসেপচুয়াল/ইনটেলেকচুয়াল গেজ করার চেষ্টা করবেন (ভবিষ্যতে সুযোগ হলে এই বিষয়ে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব)। অযথা অপ্রয়োজনীয় তথ্য বহন করে নিজের মস্তিষ্ককে জঞ্জালপূর্ণ করবেন না, প্রয়োজনীয় অংশ বারংবার পড়বেন। ১ বার পড়বেন, ২ বার পড়বেন, ৩ বার পড়বেন। আবারও পড়বেন...বারবার পড়বেন।

লেখক: প্রশাসন ক্যাডার, ৪৩ বিসিএস

 

সর্বশেষ সংবাদ